আরাফাত আহমেদ রনি, নিজেস্ব প্রতিবেদক আগে ভাবতাম বঙ্গোপসাগরে শুধু আমাদের প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হয়। কিন্তু আজকের আলোচনা শুনে জানলাম এই সাগরে আমাদের তুলনায় পাশের দেশগুলো থেকে আসে দশগুণ বেশি বর্জ্য। আমাদের বঙ্গোপসাগরে পাশের দেশগুলো বেশি বর্জ্য ফেলছে।
রোববার (৩০ মে) বাংলাদেশ একাডেমিক অব সায়েন্স ও অ্যাসোসিয়েশন অব একাডেমিক অ্যান্ড সোসাইটি অব এশিয়া আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি এ দাবি করেন।
বঙ্গোপসাগর রক্ষার্থে মন্ত্রী বলেন, তবে এটি নিয়ন্ত্রণের তেমন কোনো উপায় নেই। কারণ দেখা যায় তাদের নদীগুলোর মাধ্যমে এই বর্জ্য সাগরে এসে মেশে। তবে আমাদের দেশের বিকল্প আমাদের তৈরি করতে হবে। আমাদের সাগরকে রক্ষা করতে হবে। বিদেশে যখন আমি প্রথম গিয়েছিলাম তখন দেখেছিলাম সেখানেও প্লাস্টিকের ব্যবহার আছে। তবে তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেম আছে, কিন্তু আমাদের তা নেই। আমরা যেখানে সেখানে প্লাস্টিক ফেলে দেই। প্লাস্টিক একটি জাতীয় ইস্যু। এ নিয়ে আমার বিশদ বর্ণনার দরকার নেই। আমি শুধু কিছু উদাহরণ দেই।
‘তামাকের কারণে আমাদের অনেক প্রাণহানি হচ্ছে। সরকারের অনেক ক্ষতি হচ্ছি। তবে এটাকে কোনোভাবে আমরা দমন করতে পাচ্ছি না। আমি যখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছি তখন আমরা এনবিআরের মাধ্যমে নানাভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমরা তা পারছি না। প্লাস্টিকও এখানে একটি বড় উদাহরণ। কারা যেন একটা আইন করেছিল প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু আমরা এখানে কনটেন্ট করতে পারছি না। আমাদের অনেকখানে আইন ব্যবহারের দুর্বলতা রয়েছে। এর বিকল্প আছে তবুও আমরা পাচ্ছি না। ’
তিনি আরো বলেন, আমাদের শহরের ড্রেনগুলো প্লাস্টিকে ভরে যাচ্ছে। সাগরের তলদেশ ভরে যাচ্ছে প্লাস্টিকে। মাছের পেটে প্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের কাছে প্রস্তাব আসে, এটা সেটা চায় আমরা অনুমোদন দেই। কিন্তু পরে আর কাজ হয় না। এটা নিয়ে আমাদের সরকারপ্রধানও বিরক্ত । তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেন, তোমরা তো প্রায়ই বলো বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ বানাবা, কিন্তু বিদ্যুৎ কোথায়? আমি একশ কোটি লাগলে তাই দেবো, তোমরা একটা করে নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, সিলেট করে দেখাও যে তোমরা পারো। ’
ওয়েবিনারের অর্গানাইজিং সেক্রেটারি প্রফেসর ড. লিয়াকত আলী বলেন, প্লাস্টিক দূষণ একটি ভয়াবহ বিষয় যেটি মানুষের শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি আবহাওয়ারও ব্যাপক ক্ষতি করে। শুধু এশিয়াতে ৫১ শতাংশ প্লাস্টিক উৎপাদন হয় যা পরিবেশ দূষণে বড় ভূমিকা রাখছে। এই দিক দিয়ে আমাদের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। সারাবিশ্বে প্রতিদিন তিন হাজার টন প্লাস্টিকের বর্জ্য উৎপাদিত হয় তার মধ্যে বাংলাদেশে উৎপাদিত হয় শতকরা আট শতাংশ। যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এক্ষেত্রে প্রথমেই আমাদের দেশের যে বিদ্যমান আইন আছে সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের কিছু আইনের সংশোধন করতে হবে। পাট নিয়ে আরো কাজ করতে হবে।