সিএনবিডি ডেস্কঃ এশিয়ার নোবেলখ্যাত  র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) বিজ্ঞানী ড. ফিরদৌসী কাদরী।

আজ মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) র‌্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব ট্রাস্টি ২০২১ সালের পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে।

র‌্যামন ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানী ফেরদৌসী কাদরী ছাড়াও এ বছর পাকিস্তানে দারিদ্র বিমোচনে ভূমিকা রাখায় দেশটির অন্যতম বৃহৎ এক ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান মোহাম্মদ আমজাদ সাকিব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাস্ত্যুচুত শরণার্থীদের জীবন পুনর্গঠনে কাজ করা স্টিভেন মুনচি-ও এই পুরস্কার পেয়েছেন।

র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার এশিয়ার সর্বোচ্চ সম্মাননা এবং এই অঞ্চলে নোবেল পুরস্কারের সমতুল্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ড. ফেরদৌসী কাদরীর বিষয়ে ম্যাগসেসে অ্যাওয়ার্ড ফাউন্ডেশন বলছে, কাদরী একজন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী; যিনি লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে কলেরা টিকা আবিষ্কারে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) ইমিউনোলজি বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফেরদৌসী কাদরী।

প্রসঙ্গত, ড. ফেরদৌসী কাদরীর ফিরদৌসীর প্রধান গবেষণার বিষয় হলো অন্ত্রের রোগ। বিশেষ করে ইমিউনোলজি, জিনোমিক্স, প্রোটোমিক প্রযুক্তি এবং ডায়াগনস্টিকস ও ভ্যাকসিনে উন্নতি সাধন। তিনি বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের জন্য নতুন ধরনের স্বল্পদামের কলেরা টিকা উন্নয়নে কাজ করেছেন। তিনি ব্যয়বহুল ‘ডকোরাল’ টিকার পরিবর্তে ‘শানকল’ নামক একটি টিকা ঢাকায় ব্যবহার করে সফলতা লাভ করেন। পরবর্তীতে টিকাটি রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

উল্লেখ্য, ড. ফেরদৌসী কাদরী ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও আণবিক জীববিদ্যা বিভাগ থেকে বিএসসি ও ১৯৭৭ সালে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর ১৯৮০ সালে যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন/প্রতিষেধকবিদ্যা বিভাগ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

আইসিডিডিআর,বি’র প্রতিষেধকবিদ্যা বিভাগ থেকে পোস্টডক্টরাল গবেষণা শেষ করার পর, তিনি একই প্রতিষ্ঠানে ১৯৮৮ সালে সহযোগী বিজ্ঞানী হিসেবে যোগ দেন। পরে তিনি একই প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী এবং মিউকোসাল ইমিউনোলজি ও ভ্যাকসিনোলজি বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

উন্নয়নশীল দেশে শিশুদের সংক্রামক রোগ চিহ্নিতকরণ ও বিস্তার রোধে প্রাথমিক চিকিৎসা কার্যক্রম ও টিকাদান কর্মসূচি জোরদারে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ২০২০ সালে তিনি ‘লরিয়েল-ইউনেস্কো উইমেন ইন সায়েন্স অ্যাওয়ার্ড’(এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল) লাভ করেন।

এছাড়া, ২০১৩ সালে অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার পান ফেরদৌসী। আর ২০২১ সালে সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকীতে এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকায় তিনি অন্তর্ভুক্ত হন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *