বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশীরাই বেশী উদ্বিগ্ন। ৬ মাসেরও বেশী সময় বাকি রয়েছে জাতীয় নির্বাচনের। বিদেশীদের তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে। প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসে সভা করছে নির্বাচন নিয়ে। যে কোন দেশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক যাওয়া দোষের নয়। তবে সে দেশের সাংবিধানিক ব্যবস্থার বিপক্ষে কথা বলা কূটনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূত। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং যুদ্ধ করে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ৩০ লক্ষ মানুষের প্রাণ গেছে স্বাধীনতা অর্জনে। সেই দেশে বিদেশী মোড়লদের এই খবরদারি অনাধিকার অনুপ্রবেশ। রাজনীতি কিংবা নির্বাচন নিয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপ কোন ভাবেই কাম্য নয়।
গণতান্ত্রিক নির্বাচনে পরাজিত দল কিংবা ব্যক্তি অর্থ ব্যয় করে এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে বিদেশীদের কাছে দেশের বিরুদ্ধে নালিশ করা অপরাজনীতি। সেই অপরাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করতে যারা এই দেশে এসেছে তাদের দেশের গণতন্ত্র নিয়েও বিশ্বজুড়ে চর্চা হচ্ছে। বিদেশী গণমাধ্যমে অর্থ ব্যয় করে যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তারা দেশপ্রেমিক নয়। সরকারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে উস্কে দিয়ে তারা ক্ষমতার পথ সুগম করতে চায়। যারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শ্লোগান দিচ্ছে তাদের আমলের গণতন্ত্রটি ভুলে যাওয়া সঠিক নয়। বাস্তবতা হল বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের অধীনে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। অভাবনীয় সাফল্য এনে দিয়েছে দেশে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যতম ইকনোমিক ফেক্টরে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশ। যারা দেশ পরিচালনায় যারা ব্যর্থ হয়েছিল তাদের কাছে এই সাফল্যটি পছন্দ নয়। তাই প্রতিদিন তারা সরকারের বিরোধী অসত্য বক্তব্য দিয়ে চলেছে।
দেশে গণতন্ত্র না থাকলে তাদের বক্তব্য প্রচার হয় কিভাবে? সরকারের এই সাফল্যটি বিদেশীরাও জানে। বাংলাদেশকে নিয়ে আগে যারা উপহাস করত, তলা বিহীন ঝুড়ি বলে ব্যঙ্গ করত। তারাই এখন উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশকে অনুসরণ করার পরামর্শ দেয়! পাকিস্তানের জনগণ টেলিভিশনে এসে বলে ” হামকো কুছ নেহি চাহিয়ে হামলোগোকো বাংলাদেশ বানা দো…”। যারা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি হয়ে ঢাকায় এসেছে তারাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ প্রেমের দৃঢ়তা জানে। তাইতো তারা নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে কথা বলেননি। তবে একটি সুষ্ঠ নির্বাচন প্রত্যাশা করেছেন তারা। এমন প্রত্যাশার প্রতিশ্রুতি শেখ হাসিনাও বার বার দিয়েছেন। নির্বাচনে না গিয়ে নিরপেক্ষ হবেনা বলে চিৎকার করলে তো দাবীটির সত্যতা প্রমাণ করা যাবেনা। বিদেশী প্রতিনিধিরাও বলে গেছেন তারা কোন দলের পক্ষে কথা বলতে আসেনি। তাহলে ফলাফল কি দাড়ালো? এখন নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া ভিন্ন কোন পথ নেই ক্ষমতায় যাওয়ার।
বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনে বিদেশী হস্তক্ষেপ মেনে নিবেনা। বি এন পি কিংবা তাদের সমমনা দলগুলি যেভাবে দাবী করে তাতে তাদেরই সমর্থক বেশী। এমনটি হলে নির্বাচনে যাওয়াইতো শ্রেয়। তাদের আবার সরকার পতনের আন্দোলন করতে হবে কেন? আর মাত্র ৬ মাস বাকি এখন তাদের নির্বাচনি প্রস্তুতি গ্রহনের কথা। কিন্তু আসল সত্যটি হল তাদের দল সংগঠিত নয়। জন সমর্থনও নেই এখন আর। কারন দলটির কোন নেতা নেই। এমন অবস্থায় নির্বাচনে গেলে যে ফলাফল হবে তা নেতারা জানে। যে কারনে একটা অস্বাভাবিক রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তারা রজনীতি করছে। চেষ্টা করছে কোন বিদেশী শক্তি তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথটি সুগম করে দিবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদের বিরুদ্ধে লড়াই করেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেছেন। বি এন পি জামাতের রাজনৈতিক কৌশল আর সক্ষমতাটিও তার ভালভাবেই জানা। তিনি দৃঢ় কন্ঠে সরকারের একদফা দাবীটি বলে দিয়েছে। ” সংবিধান যে পন্থায় নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে সেভাবেই দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে”। কোন বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা।
আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা