বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশীরাই বেশী উদ্বিগ্ন। ৬ মাসেরও বেশী সময় বাকি রয়েছে জাতীয় নির্বাচনের। বিদেশীদের তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে। প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসে সভা করছে নির্বাচন নিয়ে। যে কোন দেশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক যাওয়া দোষের নয়। তবে সে দেশের সাংবিধানিক ব্যবস্থার বিপক্ষে কথা বলা কূটনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূত। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং যুদ্ধ করে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ৩০ লক্ষ মানুষের প্রাণ গেছে স্বাধীনতা অর্জনে। সেই দেশে বিদেশী মোড়লদের এই খবরদারি অনাধিকার অনুপ্রবেশ। রাজনীতি কিংবা নির্বাচন নিয়ে বিদেশী হস্তক্ষেপ কোন ভাবেই কাম্য নয়।

গণতান্ত্রিক নির্বাচনে পরাজিত দল কিংবা ব্যক্তি অর্থ ব্যয় করে এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে বিদেশীদের কাছে দেশের বিরুদ্ধে নালিশ করা অপরাজনীতি। সেই অপরাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করতে যারা এই দেশে এসেছে তাদের দেশের গণতন্ত্র নিয়েও বিশ্বজুড়ে চর্চা হচ্ছে। বিদেশী গণমাধ্যমে অর্থ ব্যয় করে যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তারা দেশপ্রেমিক নয়। সরকারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে উস্কে দিয়ে তারা ক্ষমতার পথ সুগম করতে চায়। যারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শ্লোগান দিচ্ছে তাদের আমলের গণতন্ত্রটি ভুলে যাওয়া সঠিক নয়। বাস্তবতা হল বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের অধীনে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। অভাবনীয় সাফল্য এনে দিয়েছে দেশে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যতম ইকনোমিক ফেক্টরে পরিনত হয়েছে বাংলাদেশ। যারা দেশ পরিচালনায় যারা ব্যর্থ হয়েছিল তাদের কাছে এই সাফল্যটি পছন্দ নয়। তাই প্রতিদিন তারা সরকারের বিরোধী অসত্য বক্তব্য দিয়ে চলেছে।

দেশে গণতন্ত্র না থাকলে তাদের বক্তব্য প্রচার হয় কিভাবে? সরকারের এই সাফল্যটি বিদেশীরাও জানে। বাংলাদেশকে নিয়ে আগে যারা উপহাস করত, তলা বিহীন ঝুড়ি বলে ব্যঙ্গ করত। তারাই এখন উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশকে অনুসরণ করার পরামর্শ দেয়! পাকিস্তানের জনগণ টেলিভিশনে এসে বলে ” হামকো কুছ নেহি চাহিয়ে হামলোগোকো বাংলাদেশ বানা দো…”। যারা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি হয়ে ঢাকায় এসেছে তারাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ প্রেমের দৃঢ়তা জানে। তাইতো তারা নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে কথা বলেননি। তবে একটি সুষ্ঠ নির্বাচন প্রত্যাশা করেছেন তারা। এমন প্রত্যাশার প্রতিশ্রুতি শেখ হাসিনাও বার বার দিয়েছেন। নির্বাচনে না গিয়ে নিরপেক্ষ হবেনা বলে চিৎকার করলে তো দাবীটির সত্যতা প্রমাণ করা যাবেনা। বিদেশী প্রতিনিধিরাও বলে গেছেন তারা কোন দলের পক্ষে কথা বলতে আসেনি। তাহলে ফলাফল কি দাড়ালো? এখন নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া ভিন্ন কোন পথ নেই ক্ষমতায় যাওয়ার।

বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনে বিদেশী হস্তক্ষেপ মেনে নিবেনা। বি এন পি কিংবা তাদের সমমনা দলগুলি যেভাবে দাবী করে তাতে তাদেরই সমর্থক বেশী। এমনটি হলে নির্বাচনে যাওয়াইতো শ্রেয়। তাদের আবার সরকার পতনের আন্দোলন করতে হবে কেন? আর মাত্র ৬ মাস বাকি এখন তাদের নির্বাচনি প্রস্তুতি গ্রহনের কথা। কিন্তু আসল সত্যটি হল তাদের দল সংগঠিত নয়। জন সমর্থনও নেই এখন আর। কারন দলটির কোন নেতা নেই। এমন অবস্থায় নির্বাচনে গেলে যে ফলাফল হবে তা নেতারা জানে। যে কারনে একটা অস্বাভাবিক রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তারা রজনীতি করছে। চেষ্টা করছে কোন বিদেশী শক্তি তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথটি সুগম করে দিবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদের বিরুদ্ধে লড়াই করেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেছেন। বি এন পি জামাতের রাজনৈতিক কৌশল আর সক্ষমতাটিও তার ভালভাবেই জানা। তিনি দৃঢ় কন্ঠে সরকারের একদফা দাবীটি বলে দিয়েছে। ” সংবিধান যে পন্থায় নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে সেভাবেই দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে”। কোন বিদেশী প্রেস্ক্রিপশনে শেখ হাসিনা চলেননা।


আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা

মির্জা ফখরুল

বৃহস্পতিবার বি এন পি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন আগামি নির্বাচনটি জাতির জন্য গুরত্বপূর্ন। এই নির্বাচনের উপর জাতির স্বাধীনতা এবং অস্তিত্ব নির্ভর করবে। কেন মির্জা ফখরুল এমন ভয়ঙ্কর সন্দেহ করলেন বলেননি। তবে তার বক্তব্য নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কারা দেশের স্বাধীনতা বা অস্তিত্ব হরণ করবে? মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের দুটি অর্থ হতে পারে (১) বর্তমান ক্ষমতাসিন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে দেশের স্বাধীনতা থাকবেনা এবং (২) আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে দেশের স্বাধীনতাকে খর্ব করা হবে। স্বভাবতই প্রশ্ন কারা সেই অপশক্তিটি?

স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ২৪ বছর এই স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে জীবন দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। আওয়ামী লীগের দ্বারা স্বাধীনতা বিনষ্ট হবে এমন কথা হিরো আলমও বিশ্বাস করবেনা। কিন্তু স্বাধীনতার সকল অর্জনকে কলঙ্কিত করেছে ৭৫ এর পরবর্তী সরকার। স্বাধীনতার শত্রু রাজাকারদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছে বি এন পি। প্রখ্যাত রাজাকারকে এম পি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এমনকি রাষ্ট্রপতিও বানিয়েছে দলটি। এখন সেই দলের নেতাই যদি স্বাধীনতা আর দেশের অস্তিত্ব নিয়ে সঙ্কা প্রকাশ করেন তাহলে তা ভাবনার তো বটেই, এমন বক্তব্যের উদ্দেশ্যটিও জানা দরকার। কারন বি এন পি ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রের চার মৌল নীতি বদলে দিয়েছে। জাতীয় সঙ্গীত বদলের অপচেষ্টা করেছে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের আদলে মৌলবাদী রাষ্ট্র বানানোর পায়তারা করেছে। গনতন্ত্রকে হত্যা করে সামরিকতন্ত্র চালিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা ধরে রেখেছে দীর্ঘদিন। অনেক সংগ্রাম করে সেই সামরিকতন্ত্রকে পরাজিত করে জনগনের রায়ে সরকার গঠন করে গনতন্ত্র পূনরুদ্ধার করা হয়েছে দেশে। সেই গনতান্ত্রিক ধারাকে ব্যবহার করে বি এন পি নিত্য শ্লোগান দিচ্ছে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার। এখন তাহলে জানতেই হবে কোন ধারার গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল তার বক্তৃতায় আরও দাবী করেছেন বর্তমান সরকার সবকটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বিনীতভাবে মির্জা ফখরুলের কাছে প্রশ্ন কোন প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হয়েছে বলে তিনি মনে করেন? দেশে রাজাকারতন্ত্র চালু করাই কি গনতন্ত্রের নমুনা? গনমাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হউক। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এবং বি এন পি সরকারের পার্থক্যটি পরিস্কার হয়ে যাবে। একজন রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য হতে হবে সত্য নির্ভর এবং সঠিক। মির্জা ফখরুলের মত একজন শিক্ষিত নেতাকে হিরো আলম ভাবার কোনই কারন নেই। তাহলে কি মির্জা ফখরুল জেনে শুনেই অসত্য কথা বলছেন?

বাংলাদেশের স্বাধীনতা কোন ঠুনকো ভাবনা নয়, ৩০ লক্ষ মানুষের রক্তের দামে কেনা এই স্বাধীনতা। কোন ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের হুমকিতেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা খর্ব হবেনা। যারা কথায় কথায় দেশের স্বাধীনতা রক্ষার হুমকি দেয় স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের ভুমিকা দেশের মানুষ জানে। ক্ষমতার নেশায় ফখরুলরা অসংলগ্ন কথা বলে মাঠ গরম রাখেন। কিন্তু তাদের আসল উদ্দেশ্যে ভিন্ন। বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানূষ স্বাধীনতা রক্ষা করবে যে কোন মূল্যে! বক্তব্য দিতে গিয়ে বেশী উত্তেজিত না হওয়াই সমীচীন হবে।

মির্জা ফখরুল নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবী করেন। তিনি ভারতে গেছেন শরনার্থী হয়ে কোন যুদ্ধ করেননি। এমন তিন কোটি শরনার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। বি এন পি’র সিনিয়র মন্ত্রী (জিয়া সরকারের) মশিউর রহমান যাদু মিয়া, আব্দুল মান্নান (বি এন পি’র সাবেক মহাসচিব) তারাও ভারতে গিয়ে আবার দেশে ফিরে এসেছেন। এরা যদি মুক্তি যোদ্ধা হয় তাহলে ৩ কোটি শরনার্থী সবাই মুক্তিযোদ্ধা। মির্জা ফখরুলের স্বাধীনতা নিয়ে বক্তব্য দেশের প্রচলিত আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাওয়া হউক। স্বাধীনতা নিয়ে এই বক্তব্যের অর্থ শুভ নয়!


আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা

ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচন

সরকারের মেয়াদ প্রায় শেষ হতে চলেছে। এই সময়ে কোন উপ-নির্বাচন নিয়ে মানূষের মধ্যে উত্তেজনা নেই। ঢাকার-১৭ আসনটি শুন্য হওয়ায় উপ-নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যকতা থাকায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৬ মাসেরও কম সময়ের জন্য এম পি নির্বাচিত হয়ে খুব বেশী কিছু করার আছে মনে হয় না। যে কারনে এই নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যেও আগ্রহ নেই। কিন্তু একটি বিশেষ কারনে নির্বাচনটি গুরুত্ব পেয়েছে দেশে জুড়ে।

ঢাকার এই অভিজাত এলাকায় হিরো আলম বিজয়ী হলে সরকারের গ্রহনযোগ্যতায় চাপ বাড়বে। এলাকার ভোটারদের উপরও প্রশ্ন ছুড়বে পছন্দের বিষয় নিয়ে। দেশে যে কোন সুস্থ নাগরিক যে কোন নির্বাচনের প্রার্থী হতে বাধা নেই। হিরো আলমও এই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে সেই অধিকারেই। নির্বাচনটি খুব বেশী প্রতিযোগিতামুলক হবে কেউ ভাবেনি। কিন্তু হিরো আলম প্রার্থী হওয়ায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে দেশ জুড়ে। কেউ কেউ হিরো আলম বিজয়ী হবে বলেও প্রচারনা চালাচ্ছে। যদি সত্যই হিরো আলম বিজয়ী হয় তাহলে এই আলোচনাটি থামবে মনে হয়না। ক্ষমতাসীন দলের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে জাতীয় নির্বাচনেও। হিরো আলম পরাজিত হলেও কেউ কিচ্ছু বলবেনা কিন্তু টক শো’ জমবে ভাল। কে কত ভোট পেল তা নিয়ে বিশ্লেষন হবে গনমাধ্যমে। আবার কারচুপির অভিযোগও করবে বিরোধী দল। সরকার বিরোধী আন্দোলনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে হিরো আলমকে নিয়ে। রঙ্গ রসের সুযোগ হবে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা নিয়ে। আলোচনায় থেকে হিরো আলম রাজনীতিতেও হিরো বনে যাবে।

এই নির্বাচনে হিরো আলমকে বিজয়ী করা লক্ষ্য নয়। হিরো আলমকে ব্যবহার করে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে উষ্কে দেওয়াই উদ্দেশ্য। বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় দাবীটি প্রমান করাই বিরোধী দলের মূল লক্ষ্য। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির অবস্থা তৈয়ার হবে এই নির্বাচনে। রাজনীতিতে অস্থির অবস্থা সৃষ্টি করে অনির্বাচিত সরকারের হাতে দেশকে তুলে দেওয়ার পায়তারা করছে বিরোধী দল। কারন ৫ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেও জনগনের সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হয়েছে। চতুর্থ বার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে বিরোধী দলের অস্তিত্ব সঙ্কট শুরু হবে। তাই মরিয়া হয়ে এখন হিরো  আলমকে ভর করে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিরোধী জোট এবং তাদের শরিকরা মরিয়া হয়ে মাঠে নামবে। এমন হিরো আলম আগেও বহুবার নির্বাচনে এসেছে। হাস্য রসের জন্ম দিয়ে হারিয়ে গেছে। কিন্তু হিরো আলম এখনই বিদায় নিবে মনে হয়না। ইন্দন দাতারা হিরো আলমকে রাজনীতির মাঠে রেখে সরকারকে বিতর্কিত করতে চায়। জাতীয় নির্বাচনেও এর প্রভাব পরতে পারে।

বর্তমান সরকার টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থেকে দেশে যে উন্নয়নের দেখিয়েছে তা আগে কোন সরকার পারেনি। দেশের এই উন্নয়ন ভোট ব্যাঙ্কও বদলে দিয়েছে। বিরোধী দলের জন্য তা সুখকর নয়। মানূষ উন্নয়নে আগ্রহী। তবে বর্তমান সরকারের কোন কোন এম পি মন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে জনপ্রিয় নয়। বেশীদিন ক্ষমতায় থাকলে এমনটি হওয়া অস্বাভাবিকও নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ চতুর্থ বার সরকার গঠন করতে পারলে বিরোধী দলের রাজনীতি আর সহজ হবেনা। কেউ কেউ নির্বাচিত হলেও নিকট ভবিষ্যতে সরকার গঠনের যোগ্যতা দেখাতে পারবেনা বিরোধী দল। রাজনীতি যেভাবে লাভজনক হয়ে গেছে ব্যবসায়ীরাও আর বিরোধী দলের পক্ষে অর্থ বিনিয়োগ করবেনা। অর্থায়ন না পেলে দলের অস্তিত্বের পাশাপাশি অনেক নেতারও অনটন শুরু হয়ে যাবে। তাই হিরো আলমকে নির্বাচনে ধরে রাখা খুব জরুরী। তবে বর্তমান সরকারকে হটাতে হলে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাটিকে বিতর্কিত প্রমান করতে হবে প্রথম।

এছাড়া বিরোধী দলের হাতে আর কোন ট্রাম কার্ড নেই। প্রচার প্রচারনায় হিরো আলমই অগ্রাধিকার পাচ্ছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে হিরো আলম ভালই ভোট পাবে। বিজয়ী হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা। তবে দেশের অভিজাত এলাকার এই আসনটিতে হিরো আলমকে নিয়ে এত আলোচনা রাজনীতির মানদন্ডটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে অনেকের অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু হিরো আলমকে নিয়ে উম্মাদনা দেশের রাজনীতির জন্য অশুভ বার্তা বহন করবে। এখন দেখার বিষয় এই আসনের ভোটাররা কি রায় দেয়!


আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক চরম দু:সময় চলছে : আজিজুর রহমান প্রিন্স

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন এক চরম দু:সময় চলছে। শক্ত কোন বিরোধী দল নেই। যারা বিরোধী দল দাবী করে তারা সরকারী দলের হয়ে সংসদের নিয়ম পালন করছে। আবার ক্ষমতায় যেতে অধৈর্য হয়ে উঠেছে অন্যরা। জনগনের পক্ষে কথা বলার কোন বিরোধী দল নেই দেশে। নেতাদের অনেকেই এখন আর নৈতিকভাবে স্বচ্ছ নয়। রাজনীতি এখন পুরুটাই ক্ষমতা কেন্দ্রিক এবং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা কেবল।

বর্তমান সরকার দেশে ব্যপক উন্নয়ন করেছে। কিন্তু কিছু কিছু নেতা, এম পি মন্ত্রীর কর্মকান্ডে ব্যাপক সমালোচিত। রাজনীতি এখন আর মানুষকে ভরসা দিতে পারছেনা। তাই দেশের মানুষ একটি স্বচ্ছ এবং জনপ্রতিনিধিত্বমূলক দল প্রত্যাশা করে আসছে বহুদিন ধরেই। সুযোগও সৃষ্টি হয়েছিল এই শুন্যতায় নতুন দল গঠনের। কিছু দলছুট নেতা এবং ব্যক্তি ইমেজকে ব্যবহার করে জোট গঠনেরও চেষ্টা করেছে। তাদের মধ্যে অনেকের যোগ্যতাও রয়েছে। কিন্তু এই দলছুট নেতাদের মধ্যে যা নেই তা হল ধৈর্য্য। এই জোটেরও মূল লক্ষ্যটি দ্রুত ক্ষমতায় যাওয়া। নিজেরা মতবিরোধ করে খন্ড খন্ড দলে বিভক্ত হয়ে পরেছে। এখন নামসর্বস্ব নেতা পরিচয়ে জ্ঞান বিলান জাতিকে। এই নেতারা দুই জন এক মত হতে পারেন না।

হঠৎ করেই ভিপি নূরের নেতৃত্বে কিছু তরুণ  একটি নতুন দল গঠনে স্বক্রিয় হয়। সেই দলের আহবায়ক নির্বাচিত হয় এক সময় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এ এস এম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া। তিনি বিদেশে পড়াশুনা করে বিদেশী আদব কায়দায় অভ্যস্থ। বাংলাদেশের সঙ্গে তার খুব একটা সম্পর্ক নেই। বাবার স্থান দখল করতে রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে নতুন দলের নিবন্ধনও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। দলের নীতি আদর্শ কি হবে তা জানা না গেলেও বহু তরুণ যোগ দিয়েছিল এই নতুন দলে। তারা সাহস দেখিয়েছে নতুন দল গঠনের। এটাই প্রাত্যাশিত ছিল। ভি পি নূর দাপটের সঙ্গেই উচ্চারণ করেছিল জনতার হয়ে রাজনীতি করবেন। কিন্তু দল গঠন করে দ্রুতই তারা ক্ষমতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। দলের দুই শির্ষ নেতার স্ববিরোধী বক্তব্য এবং তাদের সন্দেহজনক আচরন জনমনে ভীতি চঞ্চার করে। এমন অবস্থাটি নতুন দল গঠনে সহায়ক নয়। দুই নেতার ব্যক্তিগত আচরন এবং পালটা পালটি বক্তব্য সংবাদ হচ্ছে প্রতিদিন। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে এরা কি পারবে রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে!

ভি পি নূরের অর্থলোভ বার বার আলোচিত হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। বিশেষ করে মোসাদ (ইসরাইয়েল গোয়েন্দা সংস্থা)র প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক এবং অর্থ গ্রহন এখন টক অব দ্যা কান্ট্রি। দলের আহবায়ক রেজা কিবরিয়া নিজেই এই অভিযোগের সত্যতা স্বিকার করে বক্তব্য দিয়েছেন। ফিলিস্থিনি রাষ্ট্রদুতও একই অভিযোগ করেছে ভি পি নূরের বিরুদ্ধে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভি পি নূরের অর্থ কেলেঙ্কারীর খবর চাউর হচ্ছে প্রতিদিন। এমন নেতাদেরকে জনগন বিশ্বাস করবে কোন ভরসায়! রেজা কিবরিয়া এবং ভিপি নূরের পালটা পালটি বক্তব্যে একটি বিষয় এখন নিশ্চিত হয়েছে, নতুন দল গঠনের এই প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে গেল। এই ব্যর্থ দল থেকেই শাখা প্রশাখা বেড় হয়ে দেশে রাজনৈতিক দলের সংখ্যাটিই কেবল বাড়াবে- জনগনের প্রত্যাশাটি পূরণ হবে না।


আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা

বদলে যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতি

দ্রুতই বদলে যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতি। রাশিয়ার পতনের পর আমেরিকা বিশ্ব মোড়ল রূপে আবির্ভুত হয়েছিল। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে দেশে দেশে আগ্রাসন চালিয়ে অস্ত্র বিক্রয় করেছে। মধ্য প্রাচ্যে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে তেলের বাজার নিয়ন্ত্রন করেছে।রাশিয়ার সাম্রাজ্যতন্ত্র পতনেও আমেরিকার ইন্দন ছিল এমন কথাও প্রচারনায় ছিল। সি আই এ বহুদেশে কর্তৃত্ব করতে বিশ্ব নেতাদের হত্যা করেছে। মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ন্ত্রনে রেখে ইসরাইলকে নি:শর্ত সমর্থন দিয়েছে। অস্ত্র দিয়ে শক্তিধর করে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাস চালিয়েছে। ভয় দেখিয়ে সৌদিআরবকে ভীতু করে রেখেছে। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দুর্বল করেছে ইরানকে। ইরাক- ইরান যুদ্ধ বাঁধিয়ে ইরাকের তেল নিয়ন্ত্রন করেছে। সেই ইরাককে কুয়েত দখলের সবুজ সঙ্গেত দিয়ে দখল নিয়েছে দুই দেশেই। সাদ্দামকে হত্যা করে ধ্বংস করে দিয়েছে ইরাককে। পুতুল সরকার বসিয়ে ইরাকে আজ্ঞাবাহ করে রেখেছে।

কিন্তু হঠাৎ করেই দৃশ্যপট পালটাতে শুরু করেছে। ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে সৌদিআরব। রাশিয়া-চীন দক্ষিন পূর্বএশিয়ার রাজনীতিতে ঢুকে গেছে। সৌদিআরব আমেরিকার খবরদারি মানছে না। ন্যাটোর সদস্য হয়েও তুরষ্ক মার্কিন কূটনীতির বিরোধীতা করছে। ব্রিক্সের সদস্য হতে চলেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানে ইমরান সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশটাকেই অচল করে দিয়েছে। ন্যাটো জোটভুক্ত অনেক দেশেই এখন মার্কিন প্রশাসনের সমালোচনা করছে। ভারতের মোদি সরকার প্রথম দিকে কিছুটা নমনীয় হলেও রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের পর আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক শিথিল করে দিয়েছে। মায়ানমারে চীন নিয়ন্ত্রন রেখেছে আগে থেকেই। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর ঐ অঞ্চলে আমেরিকান বিরোধী মনোভাব কাটেনি। দক্ষিন চায়না সাগরে আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজ মহড়া করার অনুমতি দিয়েছে সিঙ্গাপুর।

এখন বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্বীপটি চায় আমেরিকা। সেন্টমার্টিনে নৌবহর আনতে পারলে এখান থেকেই হুমকি দিবে চীনকে। বিনিময়ে বাংলাদেশেকে সামরিক অস্ত্র বিক্রি করে যুদ্ধাং অবস্থা সৃষ্টি করে রাখবে। সামরিক খাতে ব্যয় বাড়িয়ে উন্নয়নকে থামিয়ে দিবে বাংলাদেশের। ভারত চায় না বাংলাদেশে চীন কর্তৃত্ব করুক। আবার চীন এই অঞ্চলে মার্কিনিদের উপস্থিতি মানবে না। বাংলাদেশ ব্রিক্সের সদস্য হলে অর্থনৈতিক ভাবে বাজার হারাবে আমেরিকা। এই সমীকরনে শেখ হাসিনা এখন দক্ষিনপুর্ব এশিয়ার রাজনীতিতে গুরত্বপুর্ন হয়ে উঠেছেন। সাহসী বক্তব্য দিচ্ছেন কাউকে তোয়াক্কা না করে। এই রাজনীতিটি সহজ নয়। সামান্য ভুল হলে চরম মূল্য দিতে হবে বাংলাদেশকে।

তিন পরাশক্তি মাঠে নেমেছে দক্ষিনপূর্ব এশিয়ায়। সৌদিআরবও এখন চীন রাশিয়ার দলে। ইরান আগাম প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। দক্ষিন কোরিয়া হুমকি ধমকি দিচ্ছে বহুদিন ধরেই। বিশ্ব রাজনীতি এখন টলমাটাল। এই রাজনীতিতে দুটি বিষয় নিশ্চিত হবে (১) আমেরিকা এশিয়া থেকে কর্তৃত্ব হারাবে না হয় (২) আমেরিকা আঞ্চলিক আধিপত্য বজায় রেখে বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করবে। তবে বাইডেন প্রশাসনের সেই সক্ষমতা আছে মনে হয় না। তাই বিশ্ব রাজনীতির এই খেলাটি কঠিন হয়ে গেছে। সামান্য ভুল হলে বিপদ ডেকে আনতে পারে বাংলাদেশে। সঙ্গতভাবেই বাংলাদেশের সকল নেতৃত্বকে বিশ্ব রাজনীতির বিষয়টি মাথায় রেখে বক্তব্য দেওয়া উচিৎ হবে।


আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা

বি এন পি

বি এন পি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। দলটির জনসমর্থনও রয়েছে। সামরিক শাসন সহ একাধিকবার ক্ষমতায় ছিল দলটি। কিন্তু জন্মলগ্ন থেকেই বি এন পি বিপরীত ধারার রাজনীতি করে আসছে। সহজে জনপ্রিয়তা পেতে স্বাধীনতা বিরোধীদের দলে টেনে ধর্মান্ধ রাজনীতি চালু করেছে। বঙ্গবন্ধুর আত্নস্বীকৃত খুনীদের পুরস্কৃত করেছে বিদেশী দুতাবাসে উচ্চপদে চাকুরী দিয়ে। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ মৌলিক নীতি পরিবর্তন করে বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র বানিয়ে মৌলবাদকে উষ্কে দিয়েছে। ফলে গনতন্ত্রের চর্চাটি ব্যহত হয়েছে চরমভাবে। বি এন পি’র তত্বাবধানে স্বাধীনতা বিরোধীরা রাজনীতিতে ফিরে আসে বুক ফুলিয়ে। দেশে পুনরায় পাকিস্তান পন্থীরা স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয় বি এন পি’র স্বক্রিয় সমর্থনে। রাজাকার দালালরা রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে আর মুক্তিযোদ্ধারা নিগৃহীত হয়, জেল খাটে দুই সামরিক সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে। রাজনীতির শিষ্ঠাচার বিনষ্ট শুরু হয়, জন্ম হয় ব্যক্তিগত শত্রুতাও। এটাই রাজনীতিকে নষ্ট করার টার্নিং পয়েন্ট। সেই শত্রুতাটি বি এন পি’র পরে এরশাদ সরকারও অব্যহত রেখেছে। মাঠে ময়দানে গিয়ে গলা ফাটিয়ে গনতনন্ত্র কথা বললেও এই দুই সরকারই গনতন্ত্রকে হত্যা করেছে সুকৌশলে। দেশে দুঃশাসন চালিয়েছে রাজনীতির সৌজন্যতাটি ধংস করে। আজকে রাজনীতিতে হানাহানীর যে চিত্র তার শুরুটি এই সামরিক সরকারের আমলেই।

বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্রটি জিয়া জানতেন সে কথা খুনীদের মুখেই প্রকাশ পেয়েছে। সামরিক বাহিনীর ডেপুটি সেনা প্রধান জিয়া সত্য গোপন করার দায়টি কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না। তিনিও বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িতদের একজন সেকথা অসত্য হবে কেন? বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুশতাক-জিয়া যে সব আইন জারি করেছে এবং শেখ পরিবারের সঙ্গে যে আচরণ দেখিয়েছে তা এই সত্যরই প্রমান বহন করে। বেগম জিয়া ১৫ই আগষ্টে তার মিথ্যা জন্মদিন পালন করে পারিবারিক ভাবেই বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়ার জড়িত থাকার প্রমান দেয়। এখনো বি এন পি স্বাধীনতা বিরোধী নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। জামাতকে সঙ্গে করে পাকিস্তানপন্থী নীতি প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন করছে বি এন পি। এখন দাবী করছে তারা সংবিধানকেই বদলে দিয়ে নতুন সংবিধান প্রবর্তন করবে। দেশের সংবিধানকে যারা বদলে দিতে চায়, নতুন সংবিধান লিখতে চায় তারা কি করে দেশে রাজনীতি করে? সংবিধানকে অমান্য করার দুঃসাহস কি দেশের মানুষ মেনে নিবে? ৩০ লক্ষ শহীদ আর ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধানতার মূল্যবোধকে যারা বদলে দিতে চায় তারা আর যা’ই হউক জনগনের দল বা নেতা হতে পারেনা।

অথচ দেশের সুশীল সমাজের কিছু মানূষ প্রতিনিয়ত জ্ঞান দিয়ে চলেছেন সংলাপের। কার সঙ্গে সংলাপ হবে কি নিয়ে সংলাপ হবে? দেশের সংবিধান বদল করার সংলাপ দেশের মানুষ কি মেনে নিবে?যে কোন দেশে একটি সরকারে মূল দায়িত্ব হল অর্থনোতিক ভাবে দেশকে উন্নত করে জনগনের কল্যান সুবিধা সুরক্ষিত করা। এই কাজে সরকার ব্যর্থ হলে অবশ্যই তার সমালোচনা হবে। কিন্তু বর্তমান সরকার কোন কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছে? এই পার্থক্য নির্ণয়ে দেশে একটি নিরীক্ষা হওয়া জরুরী। বি এন পি সরকারের আমল আর বর্তমান সরকারের কর্মকান্ডের একটি জরিপ প্রকাশ করা হউক। তাহলেই পার্থক্যটি বেড়িয়ে আসবে। জনগনও সত্য জেনে ভোট দিতে পারবে জনগনের দলকে।

সরকারে বিরুদ্ধে সমালোচনা হবেই। সব দেশে সব সরকারের বিরুদ্ধেই সমালোচনা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। অনেক এম পি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছে। নির্বাচনে এবার অনেকেরই শোচনীয় পরাজয় হবার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বি এন পি জনগনের পক্ষ হয়ে কোন আন্দোলন করতে পারেনি। বর্তমান সরকারের কোন সাফল্যেকেই বি এন পি দেখেনি। পদ্মা সেতু নিয়ে বেগম জিয়া যা বলেছেন তা নিয়ে হাস্যরসের খোরাক হয়েছে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বি এন পি নেতারা পদ্মা সেতু নিয়ে কি বলেছে? জনগন কি বোকা? দেশের মানুষ যা দেখছে তা কি অসত্য? রাতে ভোট হয়েছে বলে চিৎকার করে আসছে গত ৫ বছর ধরে। কিন্তু এই দাবীর পক্ষে একটি প্রমানও কি উপস্থাপন করতে পেরেছে বি এন পি? দলের নেতারা দাবী করছে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০% এর বেশী ভোট পাবেনা তারমানে দেশের বেশীরভাগ জনগন বি এন পিকে সমর্থন করে। এটাই যদি সত্য হয় তাহলে দলটি নির্বাচন বর্জন করছে কার ভয়ে এবং কেন?

বি এন পি এখন যে দাবীটি করছে তা হলো (১) নির্বাচন কমিশনটি হতে হবে তাদের পছন্দ মত আর (২) সরকারকে পদত্যগ করে তাদের পছন্দ করা ব্যক্তির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। অর্থাৎ, ভোটের আগেই চুরির ব্যবস্থাটি করে দিতে হবে! এটা কেমন আবদার? আসলে বি এন পি যতবার ক্ষমতায় গেছে এভাবে ষড়যন্ত্র করেই বিজয়ী হয়েছে। না হয় হত্যা করে জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে। বি এন পি’র চোখা নির্বাচন স্বচ্ছতা মানে তাদের বিজয় নিশ্চিত করা। এটা গনতন্ত্র নয়! দেশের রাজনীতিতে এখন এটাই মূল বিষয় হায়ে দাড়িয়েছে। একটি স্বাধীনতার পক্ষে মূক্তিযূদ্ধের চেতনার পক্ষে। অন্যটি বিপক্ষে। জনগনকেইএখন ভোটের মাধ্যমে সুনিদৃষ্ট ভাবে রায় জানাতে হবে দেশ কার পক্ষে। এবারের নির্বাচনে এই দুই পক্ষের বিবেচনাটি পরিস্কার করতে হবে সব দল এবং নেতাকে।


আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা

জাতীয় নির্বাচন

সরকারের মেয়াদ পূর্ন হবে এ বছর ডিসম্বরে। তারপরই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। খুব বেশী সময় হাতে নেই, প্রস্তুতিও চলছে সব দলে। বি এন পি নির্বাচনে যাবেনা বললেও বসে নেই তারাও। বিশেষ করে গাজীপুরের নির্বাচন স্বস্তি ফিরিয়েছে অনেকের মনে। দলের মনোনয়ন না পেলে এবার স্বতন্ত্র হয়ে লড়বেন অনেকে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় গনসংযোগও শুরু করে দিয়েছেন। গ্রাম গঞ্জের চায়ের ষ্টলগুলি জমে উঠেছে নির্বাচনি আলোচনায়। এই একটা সময় বাংলাদেশের মানূষ সরব হয়।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা হয় মুলত দলের প্রার্থীর সঙ্গে অন্য দলের। কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্র দেখা যেতে পারে। বেশীরভাগ আসনে প্রতিদ্বন্দিতা হবে ব্যক্তির বিপক্ষে ব্যক্তির। দলে দীর্ঘদিনের নিবেদিত কর্মীরা এলাকায় পরিচিত। কোন অযোগ্য বিত্ত্বশালীকে দলের প্রার্থী হিসাবে তৃনমূলের কর্মীরা মেনে নিবেনা। দলের চাপে মেনে নিলেও প্রচারনায় নামবেনা। দলের ভোট ব্যাঙ্ক ভাগাভাগি হলে অনেক প্রার্থীরই বিজয়ী হওয়া কঠিন হবে। বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যাও হবে অনেক বেশী। ক্ষমতায় যেতে নীতি আদর্শ ভুলে বড় দলের নেতারাও ক্ষমতাসিন দলের টিকিট চাইবে। শরিক দলের প্রার্থীকে ছাড় দিলে হতাশ হবে কর্মী বাহিনী, স্বতন্ত্র হয়ে লড়বে বহু প্রার্থী (অনেকে দলের ইঙ্গিতেই)। যারা দলের প্রতিকের উপর নির্ভর করে সহজ জয়ের আশা করছে তাদের বিজয়ী হওয়া সহজ হবেনা। ছাড় দিবেনা দলের স্থানীয় নেতা কর্মীরা। নমিনেশন চাইতে ভির জমাবে বিত্ত্বশালীরা কিন্তু কার ভাগ্যে শিকা ঝুলবে তা শুধু নেতারাই জানে।

কেউ কেউ ইতিমধ্যে আলোচনায় এসে গেছে। কে কোন আসনে প্রার্থী হবেন তা’ও জানান দিয়েছেন গনসংযোগ করে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোষ্টারে ছেয়ে গেছে। বিপদটি হলো বড় দলগুলি প্রার্থী বাছায়ে নিয়ম বেঁধে দিলেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তা সঠিকভাবে প্রয়োগ হচ্ছেনা। অর্থের জোরে অরাজনৈতিক বিত্ত্বশালীদেরই নাম উঠে আসছে বার বার। কেন্দ্রিয় নেতারা অনেকে প্রভাবিত হচ্ছেন অর্থের কাছে। দীর্ঘ দিন ধরেই বাংলাদেশে রাজনীতিতে একটি স্বচ্ছ ধারা প্রবর্তনের দাবী উঠেছে। এই ধারা প্রবর্তনে রাজনৈতিক দলগুলির স্বচ্ছতা খুব বেশী প্রয়োজন। দল নেতা কিংবা প্রার্থী নির্বাচনে ভুল করলে সেই দাবীটি পূর্ন হবেনা। নির্বাচনে একজন বিজয়ী হবেই তবে দেশ একজন জননেতা চায় নেতা নয়। সব দলেই যোগ্য নেতৃত্ব খুব বেশী জরুরী। জরুরী দেশে একটি শক্তিশালী বিরোধী দলও।

আওয়ামী লীগ তাদের তৃতীয় মেয়াদ পূর্ন করতে যাচ্ছে। দেশে ব্যপক উন্নয়ন হয়েছে বর্তমান সরকারের আমলে। কিন্তু রাজনৈতিকে প্রাতিষ্ঠানিক করা যায়নি। বিরোধী দল জাতীয় সংসদে সরকারের বিরোধীতা করে কিন্তু তারাও সরকারেরই অংশ। যে কারনে দেশে গনতন্ত্র রক্ষায় একটি শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ প্রয়োজন। বিগত ৩ মেয়াদে প্রধান বিরোধী দল শুধু সরকার পতনের আন্দোলন করেছে। জনস্বার্থে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে পারেনি। অন্য বিরোধী দল সরকারকে সমর্থন করে সুবিধা ভোগ করেছে, জনকল্যানে নিয়োজিত হতে পারেনি। রাজনীতিতে মতবিরোধ আর আদর্শের অমিল থাকবেই কিন্তু গনতন্ত্রের ধারাটি মেনে চলতে হবে সবার এবং সব দলের। এই নির্বাচনে সকল দলের উচিৎ হবে সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করা। এম পি নয় জননেতা নির্বাচন করা।। তা না হলে যতই আন্দোলন সংগ্রাম করুক গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবেনা। গতন্ত্রই রাষ্ট্র পরিচালার একমাত্র পথ নয় তবে এখনো পর্যন্ত এর চেয়ে উত্তম কোন পন্থা আবিস্কার করা জায়নি। তাই সকল দলের নেতৃবৃন্দের কাছে সবিনয়ে নিবেদন, প্লিজ যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করুন।


আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা

গাজীপুরের নির্বাচন:

গাজীপুরের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন শেষ হয়েছে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই। অনেকে অনেক রকম আশঙ্কার কথা বলেছিল কিন্তু তার কোনটাই সত্য প্রমানিত হয়নি। বিরোধী দলের দাবী ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে নির্বাচন সুষ্ঠ হবেনা। কিন্তু কোনরকম দুর্নীতি বা অস্বচ্ছতার খবর পাওয়া যায়নি। সরকারী দলের হেভি ওয়েট প্রার্থী পরাজিত হয়েছে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে (আসল প্রার্থীটি ছিল জাহাঙ্গীর)। নির্বাচনোত্তর কোন সহিংসতার ঘটেনা ঘটেনি কোথাও। নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে যারা বিরূপ মন্তব্য করেছে তাদের সেই অনুমান সত্য প্রমানিত হয়নি। গাজীপুরে একটি স্বচ্ছ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তাদের দক্ষতার প্রমান দিয়েছে। জাহাঙ্গীরের মা পরাজিত হলে নির্বাচনোত্তর গাজীপুর কেমন হত তা এখন আর ভাবনায় না আনাই শ্রেয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরাজয় হলেও বিজয় হয়েছে গনতন্ত্রের। গাজীপুরবাসী তাদের পছন্দের মেয়র নির্বাচন করেছে স্বাধীনভাবে ভোট দিয়ে। ভালমন্দ বিবেচ্য নয় মানুষ গনতন্ত্র চর্চার সুযোগ পেয়েছে। বিরোধী দল যেভাবে দেশে গনতন্ত্র নেই বলে আন্দোলন সংগ্রাম করে চলেছে তা আসলে মিথ্যাচার-সেটাই প্রমান করেছে গাজীপুরের নির্বাচন।

এই নির্বাচন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কেও মেসেজ দিয়েছে। যোগ্য ব্যক্তিকে প্রার্থী করা হলেও স্থানীয় নেতারা দলের সিদ্ধান্ত পালটে দিতে পারে। জাতীয় নির্বাচনের চিত্রটি কেমন হবে বলা মুশকিল। তবে গাজীপুর দলকে একটি মেসেজ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তা বুঝেছেন বলেই মনে করা ভাল। আওয়ামী লীগের কোন প্রতিপক্ষ নেই, দলের নেতারাই আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ। দেশের ৩০০ টি নির্বাচনী আসনেই একাধিক প্রার্থী প্রস্তুত হয়ে রয়েছে। নির্বাচনের জন্য গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে নিজেদের মত করে। দলের মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েই দলের বিরুদ্ধে লড়বে বিদ্রোহীরা। নিজেরাই নিজেদের ভোট কাটাকাটি করে তৃতীয় পক্ষকে জয়ী করে দিবে। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চাইবে ইতিহাসের সব চাইতে বেশী সংখ্যক প্রার্থী কারন-

(১) নির্বাচন করে সরকার গঠনের মত আর কোন দল এখন বাংলাদেশে নেই।

(২) কিছু নব্য নেতা অনৈতিকভাবে বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছে (সব সরকারের আমলেই এরা ক্ষমতার ঘনিষ্ঠে থাকে)।

(৩) এলাকায় কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করে পছন্দের নেতা নির্বাচিত করেছেন স্থানীয় নেতারা, ত্যাগী কর্মীরা অবহেলিত হয়েছে সবখানে।

(৪) অনেকের বয়স ফুরিয়ে যাচ্ছে আর সুযোগ না’ও পেতে পারে এবং-

(৫) সবারই ধারনা অনেক টাকা খরচ করে হলেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেই নৌকার জোরে এম পি হয়ে যাবে!

এসব কারনে এখন বি এন পি’র নেতারাও কেউ কেউ তদবির চালাচ্ছে আওয়ামী লীগে যোগ দিতে। তাদের একটাই দাবী মনোনয়ন নিশ্চিত করতে হবে! নিশ্চয়তা পেলে দল ছুট নেতাদের হিড়িক পরে যাবে মনোনয়ন দৌড়ে। এই প্রক্রিয়ায় বি এন পি’র কেন্দ্রীয় নেতারাও রয়েছেন কয়েকজন।
গাজীপুরের নির্বাচন বিদেশী মোড়লদেরও মেসেজ দিয়েছে। কথায় কথায় নির্বাচনের স্বচ্ছতার কথা বলে যারা বিধিনিষেধ জারি করে তাদের মুখটিও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বরং তাদের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর সময় এসেছে। আর যারা কূটনৈতিক পাড়ায় গিয়ে গোপন বৈঠক করে (!) দেশের সুনাম বিনষ্ট করে নালিশ করে, তাদেরও এখন মুখে আঠা লেগে গেছে।

সুশীল সমাজখ্যাত লোকেরা দেশে রাজনীতি শুদ্ধিকরনের দাবী করে আসছে বহুদিন ধরে। তাদেরকেও মেসেজ দিয়েছে গাজীপুরের নির্বাচন। ভোটের হিসাব শুধুমাত্র যোগ্যতায় বিবেচিত হয়না। প্রভাবশালী অযোগ্যকেও ভোট দেয় শিক্ষিত মানুষেরা। অবশ্য এর জন্য একজন প্রভাবশালী ছেলে দরকার (জাহাঙ্গীরের মত)। এই নির্বাচনে কার কি হয়েছে জানিনা তবে বহু রাজনৈতিক প্রশ্নের উত্তর মিলেছে গাজীপুরে।


আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা

রাজনীতিতে সময় একটা বড় ফ্যাক্টর : আজিজুর রহমান প্রিন্স

রাজনীতিতে সময় একটা বড় ফ্যাক্টর। সব সময় সব কথা বলা যেমন সঠিক নয় আবার কথাটি বলে তা করতে না পারার ব্যত্যয়টিও বিপজ্জনক। এই জন্য রাজনীতির কথাটি বলতে হয় ভেবে চিন্তে সাবধানে। তা না হলে নেতৃত্বের উপর মানূষের আস্থা থাকেনা। এই সত্যটি দল হিসাবে বি এন পি বার বার প্রমান করেছে। আন্দোলনের ডাক দিয়ে সন্ত্রাস চালিয়েছে, ব্যর্থ হয়ে কোন ঘোষনা না দিয়েই চুপ হয়ে গেছে। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়েও স্থির থাকতে পারেনি। বৃহত্তর মোর্চা গঠন করে নির্বাচনে গিয়ে প্রচারনা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিপক্ষকে সুযোগ করে দিয়েছে বিজয়ী হতে। দু’চারটি আসনে যারা শেষ পর্যন্ত টিকে ছিল তারা কেউ কেউ জয়ী হয়েছে। হেরে গিয়ে অনেক পর রাতে ভোট হয়েছে বলে প্রচারনায় চালিয়েছে বি এন পি। এই প্রচারনাটি অনেকে গ্রহনও করেছে। কিন্তু কোন প্রমান উপস্থাপন করতে পারেনি কেউ।

এখন নির্বাচনের পদ্ধতি বদল করে নিরপেক্ষ (?) তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবী করছে বি এন পি। এই দাবীটিও গনমুখী করতে পারেনি কারন জনগনের স্বার্থে নয় ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতিটি জনগন গ্রহন করেনি। এই দাবীর পক্ষে জনসমর্থন পায়নি। বিদেশী দুতাবাসে গিয়ে নেতারা নানা রকম মিথ্যাচার করেছে। সরকারের উপর বিদেশী চাপ প্রয়োগ করাতে চেষ্টা চালিয়েছে। সেটিও সফল হয়নি। দুতাবাসের বন্ধুরা বি এন পি’র পক্ষে সমর্থন দেয়নি। তারা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দিয়ে দলের মধ্যে বিবাদে জড়িয়েছে নেতারা। সেই বিবাদ বিভক্তিতে রূপ নিয়েছে। ১২ বছর দলের কোন সম্মেলন হয়নি। বহু জেলায় পূর্নাঙ্গ কমিটি নেই। মতানৈক্যে কেন্দ্রিয় নেতারাও অনেকে নিষ্কৃয় অথবা দল থেকে বহিষ্কৃত। পরিস্থিতি এখন নির্বাচনের পক্ষে। এখন যদি বি এন পি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষনা দেয় তাহলে ভাল ফল পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আবার নির্বাচনে না গেলেও অস্থিত্ব সঙ্কটে পরবে দলটি। মা ছেলের মধ্যেও দলের কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধ গনমাধ্যমেই প্রকাশ পেয়েছে। তারেকের কারনে অনেক নেতাই দল থেকে সরে রয়েছেন। বি এন পি’র এমন দুরাবস্থা আগে কখনোই ছিল না।

সরকারের অবস্থান অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল অবস্থানে। বি এন পি যতই চিৎকার করুক এখন আর তাদের নতুন করে বক্তব্য দেওয়ার কিছু নেই। তাদের যা বলার বলে দিয়েছে যে রাজনীতি দেখানোর দেখিয়েছে। জনগনও বি এন পি’র কাছে আর কিছু প্রত্যাশা করে মনে হয়না। নির্বাচনই এখন রাজনীতির শেষ কথা। সব দল তাদের অবস্থান পরিস্কার করে দিয়েছে জনগনের কাছে। নির্বাচনেই জনগন তাদের রায় জানিয়ে দিবে কোন দলকে তারা দেশের দায়িত্ব দিতে চায়! বি এন পি ৫ বছর রাস্তায় হুঙ্কার দিয়েছে, সরকার পতনের আন্দোলন করেছে-কিছুই করতে পারেনি। কারন জনগন তাদের সমর্থন করেনি!

বি এন পি’ও একটি বড় দল, তাদেরও জনসমর্থন রয়েছে কিন্তু ভুল নেতৃত্ব দলটিকে এই অবস্থায় এনে দাড় করিয়েছে। যে যতভাবেই বক্তব্য দিক, এবার নির্বাচনের মূল লক্ষ্যটি হবে দেশের উন্নয়ন। সরকার ১৪ বছরে দেশে যে উন্নয়ন করে দেখিয়েছে তা অন্য কোন সময় কোন দল দেখাতে পারেনি। অর্থনৈতিক ভাবেও বাংলাদেশ অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল অবস্থানে। দ্রব্য মূল্য মানূষকে কষ্ট দিচ্ছে কিন্তু অবস্থাটি বিশ্ব জুড়েই। করোনা বা যুদ্ধ বিগ্রহ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারেনি।সরকার খাদ্যশস্য উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। দেশের উৎপাদন আর রপ্তানী ছিল রেকর্ড পরিমান। বিদেশে মানব সম্পদ রপ্তানীতেও বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্য সহ অনেক দেশই দখল করেছে। স্বভাবতই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়িয়েছে রেকর্ড পরিমান। হিসাবটি না করেই যারা রাজনৈতিক বক্তব্য দেন তাদেরকেও জবাবদিহিতার বিচারে মুখোমুখি হতে হবে জনতার। প্রযুক্তির যুগে ভুলতথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার দায়টি নিতে হবে তাদেরও! সরকারের বিরুদ্ধে মিথা বক্তব্য দিয়ে যারা দেশে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে তাদের চেহারাটি জনস্মমুখে খোলাসা করবে প্রযুক্তি।

অনেকেই বলেন দেশের উন্নয়ন ভোটে প্রভাব ফেলবেনা। কথাটি মোটেও সত্য নয়। বাংলাদেশের মানুষ এখন সচেতন আর প্রযুক্তির কারনে অনেক বেশী inforomed। এবার ভোটে জনগন রায় দিবে উন্নয়নের রেকর্ড দেখেই। সব দলেরই আমলনামা জনগনের কাছে পরিস্কার। গরম বক্তৃতা করে ভোট আদায় করা খুব সহজ হবে মনে হয়না। বি এন পি ভুল ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করেছে এবং সব ভুলের মাশুল গুনতে হবে এখন।


আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা। 

সদ্য সমাপ্ত সফর নিয়ে বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

জাতীয় ডেস্কঃ সদ্য সমাপ্ত জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ সোমবার (১৫ মে) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এই তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সোমবার বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন শুরু হবে।

জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৫ দিনের সফর শেষে গত ৯ মে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে ত্রিদেশীয় সফরে গত ২৫ এপ্রিল সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটের দিকে জাপানের টোকিওর উদ্দেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সেখানে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে আটটি চুক্তি হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২৯ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে আরও কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি।

এরপর রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৪ মে যুক্তরাজ্যে পৌঁছান শেখ হাসিনা। ৬ মে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। এ ছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।