প্রথম কথাটি হলো সরকারের কাছে দেশের জনগনের চাওয়াটি কি? কোন ব্যক্তিকে আর্থিক সুবিধা করে দেওয়া সরকারের কাজ নয়। সরকার দেশে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দিবে এবং সেটাই করেছে। দেশের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের দ্বিতীয় দ্বায়িত্বটি হলো দেশকে উন্নয়নমূখী করে গড়ে তোলা। বর্তমান সরকার সফলতার সঙ্গেই তা করে দেখিয়েছে। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হয়েগেছে। বিরোধী দল এই সাফল্যকে তাদের ব্যর্থতা হিসাবে অনুমান করেছে। রাজনীতির কারনে এই সাফল্যকে সরকারের ব্যর্থতা বলে প্রচারনা চালিয়েছে। জনগন তাদের এই প্রচারনাকে গ্রহন করেনি। সত্যটি জেনে বিরোধী দলের সংগে সম্পৃক্ত হয়নি-সমর্থনও করেনি। এখন বিরোধী দলের প্রচার মাধ্যম যে সব প্রচারনা চালাচ্ছে তা’ও সত্য নয়।
কিন্তু বাস্তবতাটি হলো সরকারী দলে ভীতি আছে। এবং নিজ দলের মধ্যেই ভীতিটি সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বড় ভীতিটি হলো দলে ঢুকে পরা অসাধু রাজনৈতিক ব্যবসায়ীরা। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর এই বনিয়ারা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে গেছে। এই দুর্নীতিবাজ বনিয়ারাই দলের সুনাম নষ্ট করেছে আর বিপুল অর্থ বিলিয়ে ত্যগী নেতা কর্মীদেরকে দূরে ঠেলে দিয়েছে। ত্যগী কর্মী বাহিনীকে নেতৃত্বের কাছ পৌছতে দেয়নি। এখন বেশীরভাগ এলাকায় এরাই দলকে নিয়ন্ত্রন করে।
রাজনৈতিক বনিয়ারা এখন নেতৃত্বও চায়। দলের মনোনয়ন চায় আগামী নির্বাচনে। অর্থ বিলানো শুরু করে দিয়েছে। এই বনিয়াদের দ্বিতীয় গ্রুপটি মনোনয়ন চায়না। তারা নেতৃত্বকে টাকা দিয়ে কিনে নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে চায়। আরেকবার সরকার গঠন করলে এরাই হবে দলের মূল বেনিফেশিয়ারী। রাজনৈতিক বনিয়াদের অর্থ পেতে নীতিনির্ধারকরাও পিছিয়ে নেই। দলের আসল বিপদটি এখানেই। সরকারের মেয়াদকালে এরাই সুবিধা নিয়েছে ভবিষ্যতেও এরাই সুবিধা নিবে। ত্যগী কর্মী বাহিনী আগেও কিছু পায়নি এবারও পাবেনা। দলে কোনঠাসা এই কর্মী বাহিনীটি দলের সেফগার্ড। যে কোন দুর্যোগ এলে এরাই রাজপথে জীবন দেয়। এই ত্যগী কর্মীরা এবার বনিয়াদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। কেউ কেউ দলের মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র হয়ে লড়বে। ভোট কাটবে দলের। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মূল প্রতিদ্বন্দি হবে আওয়ামী লীগ। দলের সেফগার্ড এই কর্মী বাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ করা না গেলে নির্বাচনের ফলাফল বিপদজনক হতে পারে। বহু এলাকায় দলীয় সরকারের আমলে মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে ত্যগী কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।খোঁজ নিলে অনেক এলাকাতেই এর প্রমান পাওয়া যাবে। নির্বাচনে বি এন পি বা সম্মিলিত বিরোধী দল আওয়ামী লীগের বিজয় ঠেকাতে পারবেনা। কিন্তু দলের কর্মী বাহিনী নিস্ক্রিয় হলে জনপ্রিয়তা থেকেও আওয়ামী লীগের অবস্থান বদলে যেতে পারে। এখনো সময় আছে, দলের শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে অবহেলীত কর্মীবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ করুন।
আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা