আজিজুর রহমান প্রিন্স, ঢাকা: এই দিনে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মুক্ত সনদ ৬ দফা প্রস্তাব করেছিলেন। সেই প্রস্তাব পাকিস্তানের লাহোরে উত্থাপন করতে দেয়নি মুসলিম লীগের নেতারা। ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু সভা করে জনতার কাছে দিয়েছিলেন। জনগন ৬ দফাকে বাংলার মুক্তিসনদ হিসাবে গ্রহন করে। পাকিস্তান পন্থিরা ৬ দফাকে অখন্ডতা ভঙ্গের দাবী করে শুধু বিরোধিতাই করেনি বঙ্গবন্ধুকে মামলা দিয়ে হত্যা করারও চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশেরও বহু নেতা ৬ দফার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল।আওয়ামী লীগের নেতাদের উপর নির্যাতন শুরু হয়েছিল ৬ দফার পক্ষে প্রচারনার জন্য। বঙ্গবন্ধুকে বার বার গ্রেপ্তার করে অবশেষে আগরতলা ষরযন্ত্র মামলায় ফাঁসি দেওয়ারও চেষ্টা হয়েছিল। কারন পাকিস্তানের সামরিক শাসকরা বুঝে গিয়েছিল ৬ দফা বাস্তবায়ন হলে পাকিস্তান আর এক থাকবেনা। আজ যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নানাভাবে কথা বলেন, যারা জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবী করেন। তাদের জানা উচিৎ স্বাধীনতার আন্দোলন একদিনে গড়ে উঠেনি। স্বাধীনতার ভিত্তি রচিত হয়েছিল ৬ দফার আন্দোলনের মাধ্যমে। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭০ এর নির্বাচনে এ দেশের মানুষ ৬ দফা বাস্তবায়নের পক্ষে রায় দিয়েছিল। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। নির্বাচনের পরে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ৬ দফা সংশোধন করে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কোনরকম ছাড় দিতে রাজি হননি।

স্বাধীনতা যুদ্ধ হয় ৬ দফার ভিত্তিতে বাংলার মানূষের মুক্তির জন্য। স্বাধীন সার্বভৌম স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন রচিত হয়েছিল ৬ দফার ভিত্তিতে। এই সব আন্দোলনে কোন অখ্যত মেজরের নাম গন্ধও ছিলনা। স্বাধীনতা ঘোষনা করার পরেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে মিলিটিরিরা। নিয়ে যায় পাকিস্তানে। সেখানেও সামরিক আদালতে বিচার করে বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। কবর খোঁড়া হয় জেলখানায়। কোন কিছুতেই মেজর জিয়ার কোনই সংশ্লিষ্ঠতা নেই। ৭৫ সালে জাতীর পিতাকে হত্যা করে হঠাৎ বলা শুরু হলো ড্রামের উপর দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা ঘোষনা করেছে জিয়া। তাই তিনি স্বাধীনতার ঘোষক। এমন উদ্ভট গল্প সাজিয়ে দেশের চরিত্রটি বদলে দিয়েছিল জিয়া সরকার। ৬ দফার বাস্তবায়ন জাতীয় সংবিধান বদলে ফেলে জিয়া সরকার। মোশতাক- জিয়া পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করারও চেষ্টা করেছিল জাতীয় সঙ্গীত বদল করে। এই অপশক্তি পাকিস্তানি কায়দায় মৌলিবাদকে উষ্কে দিয়ে, জামাতকে রাজনীতিতে এনে রাজনীতিকেই বদলে দিয়েছে। ৭১ এ মোশতাক পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার যে ষরযন্ত্র করেছিল। মোশতাক- জিয়া মিলে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সেই পরিকল্পনার রূপরেখা বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়েছিল। জনগন তা হতে দেয়নি কিন্তু এই অপশক্তি এখনও স্বক্রিয় রয়েছে। আজকের দিনে ৬ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়েই শত্রু শক্তিকে মোকাবেলা করা প্রয়োজন। নতুন প্রজন্মের কাছে ৬ দফার ইতিহাস পৌছানো দরকার। তাহলেই বঙ্গবন্ধু এবং ৬ দফাকে মূল্যায়ন করা হবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *