তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আবারও একটি লজ্জাবতী বানর ধরা পড়েছে। গত সপ্তাহের সোমবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার চুকারপুঞ্জি গ্রামের লোকজন বানরটিকে আটক করেন। পরে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বানরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১ মে রাতে উপজেলার দক্ষিণভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন লজ্জাবতী বানরকে আটক করেন। পরে ওইদিন রাতেই বানরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। পরিবেশকর্মীরা বলছেন, বনজঙ্গল ও গাছপালা উজাড় হওয়ায় প্রায় সময় খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে বেরিয়ে এসে স্থানীয়দের হাতে লজ্জাবতী ধরা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে। এসব বন্যপ্রাণীকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সচেতন করতে হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার উপজেলার চুকারপুঞ্জি গ্রামের কালভার্টের পাশে স্থানীয় লোকজন একটি লজ্জাবতি বানরকে দেখতে পান। পরে তারা সেটিকে ধরে এলাকার বাসিন্দা আকমল আলীর বাড়িতে আটকে রাখেন। বানরটি কোনো খাবার না খাওয়ায় মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে আকমল আলীর বাড়ির লোকজন বানরটিকে ছেড়ে দেন।
চুকারপুঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা ছানোয়ার হোসেন বলেন, সোমবার সন্ধ্যার সময় হঠাৎ বানরটিকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন আটক করেন। পরে একজনের বাড়িতে বানরটিকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বানরটি না খাওয়ায় মঙ্গলবার রাতের দিকে বাড়ির লোকজন সেটিকে ছেড়ে দিয়েছেন। ছাড়ার পর আবার গাছে উঠে চলে গেছে।
স্থানীয় এক পরিবেশকর্মী বুধবার বিকেলে বলেন, প্রায়সময় কোথাও না কোথাও লজ্জাবতি বানর ধরা পড়ছে। কারণ অবাধে বনজঙ্গল ও গাছপালা কেটে উজাড় হচ্ছে। এর ফলে এসব প্রাণি আবাসস্থল হারাচ্ছে। খাদ্য সংকটে পড়ছে। এতে খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে লোকালয়ে চলে এসে এসব প্রাণী স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে।
তবে মানুষজন আগের চেয়ে সচেতন হচ্ছে, তাই কেউ এসব প্রাণিকে ধরে আবার ছেড়ে দিচ্ছেন। এসব বন্যপ্রাণীকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সচেতন করতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। বড়লেখা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস বলেন, লজ্জাবতী বানর নিশাচর প্রাণি। পরিবেশের জন্যও ভালো। কারও ক্ষতি করেনা। এসব প্রাণিদের ধরা উচিত নয়। ধরা পড়লে আমাদের দ্রুত জানাবেন। আমরা উদ্ধার করব। আর কেউ যদি ধরে হত্যা করে তবে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।