তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে ধলাই নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে হুমকিতে পড়েছে ব্রিজ, বাড়িঘর ও বাঁধ।

অন্যদিকে, বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত বোমা মেশিনের উচ্চ শব্দে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলায় ধলাই নদীর বাঁকে বাঁকে অবৈধ ভাবে বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজকান্দি বনরেঞ্জ ঘেঁষা ধলাই নদীর পুরাতন সেতুর কাছ থেকেই দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অবৈধভাবে দুইটি বোমা মেশিনে বালু উত্তোলনের পর একটি জমিতে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে বালু। সেখান থেকে এসব বালু ট্রাকযোগে বিক্রি করা হচ্ছে। উপজেলার মাধবপুর রোডেও একাধিক স্থানে বোমা মেশিনে চলছে বালু উত্তোলন। এছাড়া ধলাইপার, মাধবপুর, রহিমপুর ইউপি আওতাধীন চৈত্রঘাট, ধর্মপুর, মৃত্তিঙ্গা এলাকাসহ নদীর বাঁকে বাঁকে বালু উত্তোলন চলছে। রহিমপুর ইউপি ধর্মপুর গ্রাম এলাকায় বালু উত্তোলনের ফলে কয়েকটি বসতঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। মৃরতিঙ্গা সড়কে ধলাই নদীর স্টিলের সেতুর পূর্বপাশে একাধিক বোমা মেশিনে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। ফলে অনেক স্থানেই বাড়িঘর, কৃষিজমি, ব্রিজ, নদীর বাঁধ হুমকির মুখে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধলাই নদীর পুরাতন সেতু এলাকা, ধলাইপার ও ধর্মপুরের কয়েক জন বাসিন্দা জানান, বালু উত্তোলনকারীরা স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা যায় না। তারা নদীর সেতুর পাশে, বাঁধের নিচে ও বাড়িঘরের কাছাকাছি নদী থেকে বোমা ও ড্রেজার মেশিনে দিয়ে বালু উত্তোলন করছে।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ ভূমি অফিসের ইউপি সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বলেন, ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে বোমা মেশিন, বাঁধের নিচ ও ব্রিজের সন্নিকটে বালু উত্তোলন সঠিক নয় দাবি করে তিনি বলেন, এখানে কয়েক জন একত্রিত হয়ে বালু উত্তোলন করছেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমম্বয়ক অ্যাড. শাহ্ সাহেদা আক্তার বলেন, ব্রিজের এক কিলোমিটার পর্যন্ত বালু উত্তোলন করা এবং বোমা মেশিনে বালু উত্তোলন আইনে নিষিদ্ধ রয়েছে। ধলাই নদী তুলনামূলক ছোট থাকায় মেশিনযোগে বালু উত্তোলনে শব্দের কারণে জনসাধারণের সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এজন্য প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া আক্তার বলেন, কয়েক দিন আগেও ধলাই নদীর একটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছি। অন্যান্য স্থানে উত্তোলনের বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, ধলাই নদীর বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে। তবে সেতুর পাশ ও বাঁধের নিচ থেকে বালু উত্তোলন করা যাবে না। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *