যুবায়ের ইবনে জহির, জবি প্রতিনিধিঃ ক্যাম্পাস ও বঙ্গমাতা হল খুলে দিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা স্বাভাবিক করা সহ ৮দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সংগঠনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন।

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি কেএম মুত্তাকীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জাহিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু, শাখা ছাত্র ইউনিয়নের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আসমানি আশা, কবি নজরুল সরকারি কলেজ সংসদের সভাপতি শামীম আহমেদ প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল খুলে দেয়ার দাবি জানান। সভাপতির বক্তব্যে কেএম মুত্তাকী বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শেষ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণ করতে হচ্ছে। কিন্তু কোনো রকম পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই হঠাৎ করে পরীক্ষার নোটিশ দেয়ায় শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পরেছে। এর মধ্যেই হল ও পরিবহন বন্ধ রাখার মতো অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তও নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে, শিক্ষার্থীরা না পারছে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে, না পারছে আবাসন সমস্যার সমাধান করবে। অন্যদিকে গণপরিবহনে চলাচলে স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরী হচ্ছে। তাই অনতিবিলম্বে, হল খুলে দিতে হবে ও শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জাহিন বলেন, একদিকে কর্মসংস্থানের সংকট, অন্যদিকে ফুরিয়ে যাচ্ছে চাকরীর বয়সসীমা। সেশনজটের ভয়াবহ চাপকে সামাল দিতে একেবারেই প্রস্তুত নয় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাই ঝুঁকি নিয়েও একাডেমিক কার্যক্রম শেষ করতে চায়। এমতাবস্থায়, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অপর্যাপ্ত প্রস্তুতি, সিলেবাস পূরণ না করে, পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করলেও হল খুলে দিতে রাজি হয়নি। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীরা না পারছে প্রস্তুতি নিতে, না পারছে আবাসনের সংকট দূর করতে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন সুবিধা পর্যন্ত দিতে রাজি না। এমতাবস্থায়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন করে সৃষ্টি হচ্ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। এই সময়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের করোনা ভাইরাসসহ প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিন প্রদান করা প্রয়োজন।

মানববন্ধনে বক্তারা, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার রোডম্যাপ তৈরি করার দাবি জানান। তারা বলেন, কোনো রকম পরিকল্পনা ছাড়া ও অংশীজনদের সাথে আলোচনা না করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হলে, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ভ্যাক্সিন প্রদান করতে হবে। এছাড়াও তারা করোনাকালে বেতন ফি মওকুফ, নামে বেনামে- এসাইনমেন্টের নামে ফি আদায় করা প্রতিষ্ঠান সমূহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ, সেশনজট রোধে দ্রুত এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, বাণিজ্যিক কোর্স বন্ধ এবং পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকীকরণ বন্ধের দাবি জানান।

ছাত্র ইউনিয়নের ঘোষিত ৮ দফা দাবির মধ্যে— করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন-ফি মওকুফ করা, এসাইনমেন্টের নামে বিভিন্ন স্কুলে বিভিন্ন আদায়কৃত ফি ফেরত দেওয়া, নামে-বেনামে ফি আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্যাম্পাস খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা করা, সেশনজট রোধে দ্রুত এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা ও সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা, পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকরণ বন্ধ করা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল খুলে দেয়া ও এলটমেন্ট কর এবং শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেয়া, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্যিক কোর্স বন্ধ করা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাক্সিন প্রদান করার কথা জানান।

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *