তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দামের চাল অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন ফি বাবত গুণতে হচ্ছে ১০০/২০০ টাকা। টাকা না দিলে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন না করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের কম্পিউটার অপারেটরের দায়িত্বে থাকা পরিচ্ছন্নতা কর্মী মোঃ রাসেলের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসুচির আওতায় জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর, পশ্চিমজুড়ী, পূর্বজুড়ী, গোয়ালবাড়ী, সাগরনাল ও ফুলতলা ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের তালিকা করার কাজ চলছে। তালিকার অনলাইনের কাজটি মূলত করার কথা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের। কিন্তু কাজে ধীর গতির বিষয়টি লক্ষ্য করে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আরিফ খান খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের পরিছন্নতা কর্মী মোঃ রাসেলকে দায়িত্ব দেন অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য। এতে কোন ফি নেওয়ার কথা না থাকলেও দায়িত্বে থাকা রাসেল অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করে সুবিধাভোগীরা।
বিশ্বস্ত সুত্রে জানাগেছে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দেখা যায়, হতদরিদ্ররা জুড়ী খাদ্য গুদামে অনলাইন রেজিষ্ট্রেশন করতে আসলে, কম্পিউটার অপারেটর রাসেল প্রতিজনের কাছ থেকে রেজিষ্ট্রেশন বাবত ২০০ টাকা ফি বলে উৎকোচের দাবি করেন। অনেকেই বাধ্য হয়ে ২০০টাকা আবার কেউ কেউ ১০০টাকা উৎকোচ রকম ফি দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করেন। ফি নামে উৎকোচ নেয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে কয়েকজন ইউপি সদস্য খাদ্যগুদামে এসে প্রতিবাদ করেন।
এ বিষয়ে কম্পিউটার অপারেটর রাসেল বলেন, আমি কোন টাকা দাবি করি নাই। ওরা খুশি হয়ে আমাকে টাকা দিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার পশ্চিমজুড়ী ইউপি সদস্য মিলন রুদ্র পাল বলেন, আমার সামনে আমার ওয়ার্ডের সবিতা, সুমন বুনার্জী ও রুপালীসহ অনেকের কাছ থেকে অনলাইন রেজিষ্ট্রেশন ফি’র নামে উৎকোচ ২০০টাকা করে নেয়।
জায়ফরনগর ইউনিয়ন প্যানেল চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ও ইউপি সদস্য কামরুল হাসান বলেন, সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১৫ টাকা কেজি দামের চালের জন্য জুড়ী খাদ্য গুদামে অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন চলছিল। অবৈধভাবে ২০০ টাকা ফি আদায়ের ব্যাপারে আমরা এসে প্রতিবাদ করি। এসময়ে আমাদের সম্মূখে কম্পিউটার অপারেটর রাসেল অনলাইনে কাজ বন্ধ করে দিয়ে বলে, অফিসের সোহেল স্যারের নির্দেশ, টাকা ছাড়া রেজিষ্ট্রেশন হবে না!
জুড়ী খাদ্য গুদামের খাদ্য নিয়ন্ত্রক জাহাঙ্গীর আরিফ খান তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, টাকা নেয়ার জন্য আমি কোন নির্দেশ দেইনি। তবে কম্পিউটার অপারেটর লোকজনের নিকট হইতে টাকা নেয়ার বিষয়টি শুনেছি। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।