যুবায়ের ইবনে জহির, জবি প্রতিনিধিঃ নিয়োগের নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্কুলের বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

এ অভিযোগের বিষয়ে গোপনসূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউজিসি থেকে নিবন্ধন করার কথা বলে নন-এমপিও শিক্ষকদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার, এমপিও ভুক্ত শিক্ষকদের কাছ থেকে এগারো হাজার এবং হসকল কর্মচারীদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার করে টাকা নিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনির হোসেন ও সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ শরিফুল আলম।

পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, আমরা যদি সরাসরি মুখ খুলি তাহলে আমাদেরকে যেকোন সময় মেরে ফেলতে পারে। আর চাকুরী হারানো নিশ্চিত। তিনি বলেন, গত বছর নভেম্বরে ৫০ জন নন এমপিও শিক্ষকদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার করে এবং এমপিও ৮/১০ জন শিক্ষকদের কাছ থেকে ১১ হাজার করে টাকা নিয়েছেন পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক। উনাদের অধীনে আমরা চাকরি করি তো কেউ যদি একটি কথাও বলি তাকে তো ওইখানে রাখবেই না বের করে দিবে৷ একটু অপরাধ হইলেই তারা এদেরকে বের করে দেয়৷ ”

এই বিষয়ে পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনির হোসেন বলেন, ” অনেকদিন আগে এই অভিযোগ উঠেছিলো। পরে আমি স্কুলে এসে তদন্ত করেছি কিন্তু সকলই অস্বীকার করে৷ আর যদি কেউ এই অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে তাহলে কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে । আমার কাছে এই বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি তাছাড়া আমি প্রত্যেক শিক্ষকেই জিজ্ঞাসা করেছি চাইলে আপনারাও করতে পারেন তারা এমন কোন অভিযোগ করে না।

শিক্ষকেরা ভয়ে মুখ খুলতে চায় না বললে তিনি বলেন, ” এদের চাকুরী তো এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চাকুরীর ভয় কিসের। এই প্রতিষ্ঠানকে যতটুকু দাড় করিয়েছি তা অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে। সুতরাং এ ধরণের কথা সম্পূর্ণ অবান্তর ও মিথ্যা।”

পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শরীফ বলেন, ” আমি তো স্কুলের কিছুই না। এইসব ব্যাপারে আমি মাথা ঘামাই না এবং এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না৷ স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষকের কাজ হলো রুটিন করা। এছাড়া আর কোন কাজ নেই। আর এই সমস্ত টাকা পয়সার বিষয় আমার ইখতিয়ার এর বাইরে। কেউ যদি এগুলা বলে থাকে তাহলে এগুলা শত্রুতার বশে বলেছে। কেউ যদি এটা প্রমাণ করতে পারে যে আমি কারো কাছ থেকে দুই আনা পয়সাও নিয়েছি তাহলে আমি এই স্কুলে আর চাকুরীই করবো না। ”

এই বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুলের গর্ভনিং বডির সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্বদ্যিালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা যেহেতু আর্থিক ব্যাপার এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। শীঘ্রই একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *