হুমায়ুন কবির, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানা পুলিশ অন্যের দখলে থাকা বাংলাদেশ পুলিশের দলিল মুলে থাকা ১ একর জমি উদ্ধার করেছে।

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার ভুল্লি এলাকায় বাংলাদেশ পুলিশের নামে থাকা ওই জমির সীমানা নির্ধারণ করে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম।

জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে এলাকার জনগণের নিরাপত্তা ও জানমাল রক্ষায় পুলিশ ফাঁড়ি করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ পুলিশকে তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী তার ব্যক্তিগত এক একর জমি দান করেন। ওই সময় সেখানে অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি বসানো হলেও পরে তা উঠিয়ে নেওয়া হয়। এভাবে এক সময় জমিটি স্থানীয় মানুষের দখলে চলে যায়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন স্থানীয় এক জমির দালাল আজিজের দখলে ছিল জমিটি। জমিতে তিনি বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করতেন। কিন্তু কিছু দিন আগে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি সেই জমিতে ভবন নির্মাণসহ নানা কার্যক্রম শুরু করেন। তারা সবাই জাল দলিলের ব্যবস্থা করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু জমিটি পুলিশের মালিকানায় থাকার বিষয়টি জানতো না জেলা পুলিশ।

সম্প্রতি গোপন সূত্রে বিষয়টি জানতে পারেন সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম। এর পরেই তিনি জমিটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। খুঁজে বের করেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও জমির দলিল।

ওসি তানভীরুল বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমি গোপনে তদন্ত শুরু করি। প্রয়োজনীয় সব কাগজ বের করি। এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সদর থানার পুলিশসহ জমিটি উদ্ধার অভিযানে যাই। জমিটি এখন পুলিশের দখলে আছে। সেখানে বাংলাদেশ পুলিশের সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে।

এই বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো চৌধুরী বলেন, আমি আগে জানতাম না এখানে পুলিশের জমি রয়েছে। সদর থানার ওসি আমাকে কাগজ দেখালে আমি বিষয়টি জানতে পারি। তবে স্থানীয় অনেক বয়স্ক মানুষ বিষয়টি জানতেন বলে পরে জানা গেছে।

জমি দানকারী রেজওয়ানুল চৌধুরীর বড় ছেলে নম্র চৌধুরী বলেন, জনগণের স্বার্থে আমার বাবা জমিটি বাংলাদেশ পুলিশকে দান করেছিলেন। বিষয়টি আমি জানতাম। এর আগে একবার মৌখিকভাবে পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তখন তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এর আগের পুলিশ সদস্যরা এই জমিটির বিষয়ে অবগত ছিল কি না তা জানা নেই। তবে আমরা সম্প্রতি জানতে পেরে পদক্ষেপ নিয়েছি। আগামীতে জায়গাটি পুলিশের কাজে ব্যবহার করা হবে।