মোঃ আমিন আহমেদ, সিলেটঃ নকল স্বর্ণের বার দেখিয়ে প্রতারণাপূর্বক আসল স্বর্ণ হাতিয়ে নেয়া সহ নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অপরাধে ৫ জন প্রতারককে আটক করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। নগরীর সিনেমা প্যালেস এলাকা থেকে কয়েকটি নকল স্বর্ণের বার তৈরির সরঞ্জাম, ও স্বর্ণালংকার রাখার কাভার উদ্ধার করা হয়। সিনেমা প্যালেস এলাকা থেকে এই প্রতারক চক্রটি আটক করা হয় বলে জানান কোতোয়ালী থানার এসআই মোঃ মোমিনুল হাসান।

আটককৃত আসামীরা হলেন, মোঃ তাজুল ইসলাম (৪২),মোঃ নজরুল ইসলাম (৩৮),মোঃ জামাল মিয়া (২৮),মোঃ কবির হোসেন (৩৮),রুরি বেগম (৩০)।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কেতোয়ালী থানাধীন ১৩৪/এ নন্দনকানন, শাহ আলী মার্কেটের কেয়ারটেকার জনৈক আবুল কালামের স্ত্রী ও পরিবার গ্রামের বাড়ীতে থাকে। স্ত্রী মাজেদা খাতুন অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী থেকে বাসায় আসার জন্য বসুরহাট এক্সপ্রেস করে সদরঘাট থানাধীন কদমতলী বাস ষ্ট্যান্ডে পৌছান। পরে একটি রিক্সাযোগে বাটালী রোড হতে এনায়েত বাজার মোড়ে পৌছালে রিক্সা চালক রিক্সার চেইন নষ্ট হয়ে গেছে বলে যাত্রীদেরকে জানায়। তখন ঐ রিক্সাচালক অপর একটি রিক্সায় যাত্রীদের উঠিয়ে দেয়। রিক্সাটি কিছু দূরে যাওয়ার পরে হঠাৎ করে রিক্সাটি থামিয়ে রিক্সার সামনে থাকা একটি প্যাকেটে মোড়ানো একটি জিনিস যাত্রীদেরকে দেখিয়ে পকেটে নিয়ে নেয়।

ঐ সময় রিক্সায় থাকা যাত্রী মাজেদা খাতুন কৌতুহল বসত রিক্সার চালককে কুড়িয়ে পাওয়া জিনিসটি কি, জানতে চাইলে রিক্সার চালক প্যাকেটটি খুলে এর মধ্যে স্বর্ণের বার পেয়েছি বলে জানায় এবং একপর্যায়ে ৫ আসামী মিলে কৌশলে আবুল কালামের স্ত্রীকে কুড়িয়ে পাওয়া স্বর্ণের বারটি রেখে টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেয়। পরে আবুল কালামের স্ত্রী মাজেদা খাতুন তাদের কথায় সরল বিশ্বাসে তার কানে থাকা ৫ আনা ওজনের ১ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল এবং আরো নগদ ১০০০ টাকা দেয়।

আসামীরা টাকা নিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া কথিত স্বর্ণের বারটি দিয়ে তার স্ত্রী ও তার সাথে থাকা কাপড়ের ব্যাগ কৌশলে রাস্তায় নামিয়ে ফেলে। মাজেদা খাতুন রিক্সার চালককে বাসায় পৌছে দেওয়ার জন্য বলিলেও রিক্সার চালক বাসায় পৌছে না দিয়ে দ্রুত চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। ঐ সময়ে সন্দেহ হলে স্বর্ণের কানের দুল ও নগদ টাকা ফেরত চাইলে রিক্সার চালক ফেরত না দিয়ে তারা দুজনেই তাদের সাথে থাকা অপর ২ জন পুরুষ ও ১ জন মহিলা সহ সু-কৌশলে রিক্সা যোগে পালিয়ে যায়। পরে আবুল কালাম বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা করে।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন জানান, মামলার সুত্র ধরে সিনেমা প্যালেস এলাকা থেকে ৫ প্রতারককে আটক করা হয়।আসামীরা প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা খুবই চালাক প্রকৃতির। গত মাসে অন্য একটি মামলায় জেলে কেটে ১ সপ্তাহ পর জামিনে বের হয়ে ৬০/৭০টি প্রতারণার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করে।

তিনি আরও জানান, তারা সকলেই হাজারী গলিতে স্বর্ণালংকারসমূহ বিক্রয় করে যে টাকা পায় সে টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়ে নেয়। হাজারী গলির স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ী কমমূল্যে উক্ত স্বর্ণালংকার সমূহ ক্রয় করে নেয়।

আসামীরা দীর্ঘ ৭/৮ বছর যাবৎ এই ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রম করে আসছে।তাদের বিরুদ্ধে সকল প্রকার আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে এই ধরনের প্রতারকদের কখনো ছাড় দেওয়া হবে না!

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *