মো. কামরুজ্জামান, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি: নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলায় স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে অনশন করছেন এক তরুণী। গত মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সকালে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামের হারেছ মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন সৈকতের বাড়িতে অনশনে বসেন ওই তরুণী। স্ত্রীর স্বীকৃতি না পেলে আত্মহত্যার করবেন তিনি।

দেলোয়ার হোসেন সৈকতের বাবা হারেস মিয়ার দাবি, তার ছেলে ২০-২৫ দিন আগে সৌদি আরবে চলে গেছে। যাওয়ার আগে ওই মেয়েকে তালাক দিয়ে গেছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন বছর আগে রুদ্রশ্রী গ্রামের হারেস মিয়ার ছেলে সৈকতের সঙ্গে ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২০ সালের ২৮ নভেম্বর তারা কোর্ট ম্যারেজ করেন। তবে ছেলের পরিবারের লোকজন বিয়ে মেনে না নেয়ায় দুজনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। দীর্ঘদিন সংসার করার পর ২০২১ সালের ৫ জুলাই ওই তরুণীকে ভাড়া বাসায় রেখে নিখোঁজ হন দেলায়ার হোসেন সৈকত।

সন্ধান চেয়ে ওই তরুণী ১ আগস্ট ঢাকার ভাষানটেক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। কোনো সন্ধান না পেয়ে মঙ্গলবার দেলোয়ারের বাড়িতে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে অনশনে বসেন।

ওই তরুণীর বলেন, ‘দেলোয়ার হোসেন সৈকত আমার স্বামী। আমরা বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় বসবাস করছিলাম। পরে স্বামীর পরিবারের লোকজনের ষড়যন্ত্রে টাকা-পয়সা নিয়ে নিখোঁজ হন সৈকত। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় বাড়িতে আসার পর থেকে আমাকে নির্যাতন করছেন। স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি না পেলে আমি এখানে আত্মহত্যা করব।’

সৈকতের বাবা বলেন, “আমার ছেলে ২০-২৫ দিন আগে সৌদি আরব চলে গেছে। যাওয়ার আগে মেয়েটিকে কোর্টের মাধ্যমে তালাক দিয়ে গেছে।”

দেলোয়ার হোসেন সৈকতের মা দিলোয়ারা আক্তার বলেন, “ছেলে কবে বিয়ে করেছে জানি না। এই মেয়েটি (তরুণীকে দেখিয়ে) আজ সকাল থেকে আমার ছেলের স্ত্রী দাবি করে ঘরে উঠেছে।”

বাবা, মা, চেয়ারম্যান তাদের তিন জনের কথার মধ্যে যথেষ্ট অমিল রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলমা চৌধুরী জানান, সৈকত ২০-২৫ দিন আগে দেশের বাইরে চলে গেছে বলে আমি শুনেছি। যে মেয়েটি অনশনে বসেছে তার একটি তালাক নোটিশ কোর্ট থেকে পরিষদে এসেছে।’

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ফেরদৌস আলম জানান, তরুণীর অনশনের বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়েছে। তার সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *