অলিউর রহমান নয়ন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ পড়াশোনার পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে মাশরুশ চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সাত তরুণ উদ্যোক্তা। তারা সকলেই বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র। বাজারে মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা ও দাম থাকায় লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।

উদ্যোমী এই সাত তরুণ উদ্যোক্তা হলেন, মাহাবুব খন্দকার নয়ন, আরমান সরকার, গালিব রহমান, কেএম মুরাদ, সুমন্ত রায়, হাবিবুর রহমান ও নাজমা খাতুন। তাদের সকলের বাড়ী উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা নাওডাঙ্গা পুলের পাড় গ্রামে।

জানা গেছে, ওই সাত তরুণের মধ্যে মাহাবুব খন্দকার নয়ন প্রথমে কিভাবে মাশরুম চাষ করা হয় তা ইউটিউবে দেখে উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসে যোগাযোগ করেন। যুব উন্নয়ন অফিসের মাধ্যমে মাগুরা জেলার ডিএমসি ট্রেনিং সেন্টারে গ্রহন করেন পনের দিনের প্রশিক্ষণ। মাহাবুবের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেন বাকি ছয় জন। এরপর উপজেলার চন্দ্রখানা পুলেরপাড় বাজার সংলগ্ন এলাকায় ৫ শতক জমিতে ১৫ হাত লম্বা একটি টিনের ঘর নির্মান করেন। নাম দেন ফুলকুড়ি বানিজ্যিক মাশরুম সেন্টার (ফুলকুড়ি বিএমসি)। ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ২০টি স্পন প্যাকেট ও ৩৭টি সিলিন্ডারের মাধ্যমে মাশরুম চাষ শুরু করেন তারা।

প্রথমে পরীক্ষামুলকভাবে খড়, কাঠের গুড়া, গমের ভূষি, ধানের তুষ ও চুন দিয়ে নিজেরাই স্পন প্যাকেট তৈরী করে বপন করেন মাশুরুমের বীজ। বীজের সঙ্গে টিস্যু কালচার যুক্ত করে সঠিক পরিচর্যা করায় ২০ দিনের মাথায় ফলন শুরু হয়। বর্তমানে তাদের খামারে ৩৫০ টি সিলিন্ডার রয়েছে।

মাশরুম চাষী মাহাবুব খন্দকার নয়ন, গালিব রহমান সহ উদ্যোক্তারা জানান, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপশি অবসর সময়ে পালাক্রমে আমরা খামারের পরিচর্যা করছি। ঘর নির্মান ও বীজসহ মোট ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি কেজি মাশরুম ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ পর্যন্ত ১০ হাজার টাকার মাশরুম বিক্রি করা হয়েছে। প্রথম দিকে কম থাকলেও বর্তমানে ৩৫০টি সিলিন্ডার মাশরুম চাষ করা হয়েছে। আশা করছি, ফলন ভাল হবে। তবে মুলধন কম হওয়ায় খামারটি সম্প্রসারণ সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরকারী সহায়তা বা স্বল্প সুদে ঋন সহায়তা পেলে এ
খামার বৃদ্ধির মাধ্যমে লাভবান হওয়া সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, ওই সাত তরুণ মাশরুম চাষে আগ্রহী হওয়ায় তাদেরকে প্রশিক্ষনসহ সব ধরণের সহযোগীতা করা হয়েছে। তারা অল্প দিনের মধ্যে মাশরুম উৎপাদন শুরু করায় উপজেলা জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতেও তাদেরকে সর্বাত্বক সহযোগীতা করা হবে।