সিএনবিডি ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে এখন আগুন লেগে গেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েই চলেছে। সংকট চলতে থাকলে আগামী ৩ মাসের মধ্যে এর দাম ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্যারেলপ্রতি ১৫০ মার্কিন ডলার ছাড়াবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন। খবর-বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

রয়টার্সের খবর অনুসারে, শুক্রবার (৪ মার্চ) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম বেড়েছে ব্যারেলপ্রতি ৭ দশমিক ৬৫ ডলার। দিন শেষে এর দর আগের দিনের চেয়ে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১১৮ দশমিক ১১ ডলার, যা ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারির পর থেকে সর্বোচ্চ। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৮ দশমিক ০১ ডলার বা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে স্থির হয় প্রতি ব্যারেল ১১৫ দশমিক ৬৮ ডলারে, যা ২০০৮ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ।

রয়টার্সের এক জরিপ থেকে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে রুশ তেল আমদানি নিষিদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের ওপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৮০ শতাংশ মানুষ রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধের পক্ষে মত দিয়েছেন।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল শুক্রবার জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্য পরবর্তী ধাপের নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার জ্বালানি খাতকে টার্গেট করতে পারে। স্বদেশে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় এখন পর্যন্ত এই পথে যাওয়া থেকে বিরত রয়েছে ব্রিটিশ সরকার।

এদিকে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধ করেছে কানাডা। রুশ তেলের বৃহত্তম আমদানিকারক চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডেসের মতো দেশগুলোতে অনেক পরিশোধনকারীই নিষেধাজ্ঞার ভয়ে রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনে অনীহা দেখাতে শুরু করেছেন।

অন্যদিকে ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি পুনর্বহালে ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা প্রায় সমঝোতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিমা মন্ত্রীরা। এটি কার্যকর হলে বিশ্ববাজারে দৈনিক আরও ১০ লাখ ব্যারেল তেল যোগ হতে পারে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরানি তেল দিয়ে রাশিয়ার ঘাটতি পূরণ সম্ভব হবে না।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক রাশিয়া। তারা দৈনিক ৪০ থেকে ৫০ লাখ ব্যারেল তেল রপ্তানি করে থাকে। ফলে মস্কোর ওপর জ্বালানি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলে তা সংকট আরও বাড়িয়ে দেবে।