বিএনপি চেয়ার পার্সন বেগম খালেদা জিয়া স্বাস কষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ৭৬ বছর বয়ষ্ক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয়বার করোনা পজেটিভ ধরা পরেছে। চিকিৎসকরা বলছেন বেগম জিয়া আই সি ইউ ডি তে অক্সিজেন নিচ্ছেন। দলের মহাসচীব বেগম জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর অনুমতি চেয়েছেন। বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার হওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আদালতে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন।

বেগম জিয়া জেলে যাওয়ার পর থেকেই বি এন পি নেতৃত্ব শুন্যতায় ভুগছে। জিয়া পুত্র তারেক জিয়াকে দলের নেতা বানালেও ইতিমধ্যে তারেকের ভুল সিদ্ধান্ত দলকে পিছিয়ে দিয়েছেন। দলের নেতা-কর্মীরা অনেকেই নেতৃত্বের প্রতি সন্তুষ্ট নয়। বিশেষ করে নমিনেশন নিয়ে তারেকের সিদ্ধান্তে অনেক ত্যগী নেতাই নিষ্কৃয় হয়ে পরেছে। দলের স্থায়ী কমিটিতেও বিভেদ এখন খোলামেলাই আলোচনা হয়। ব্যরিষ্টার মওদুদ আহাম্মদের মৃত্যুর পর মির্জা আব্বাস ইলিয়াছ আলীর গুম হওয়ার ঘটনায় দলের নেতাদের দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন। এই বক্তব্য নিয়ে মির্জা আব্বাস এখন দলে কোনঠাসা।

করোনার কারনে রাজনীতি এখন স্থবির। কবে দেশে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে কেউ জানেনা। সম্প্রতি হেফাজতের গ্রেপ্তারকৃত নেতারা যে জবানবন্দি দিয়েছে তাতে সব ষড়যন্ত্রে বিএনপি’র সংশ্লিষ্ঠতার তথ্য বেড়িয়ে এসেছে। রাজনৈতিকভাবে দলটি এখন বেকায়দায়। বেগম জিয়ার কিছু হলে তারেক জিয়া লন্ডনে বসে কিভাবে দল পরিচালনা করবেন তা নিয়ে দলের নেতারাও এখন সঙ্কিত।

বিগত নির্বাচনে ডঃ কামাল হোসেন, ডা, বদরুদ্দোজা চৌধুরীরা মিলে একটা মোর্চা সৃষ্টি করেছিল। সেই মোর্চায় নেতৃত্ব ধরে রাখতে পারেনি বিএনপি নেতারা। মোর্চা জয়ী হলে কে সরকার প্রধান হবেন এই দন্দে মোর্চা ভেঙ্গে গেছে। এ নিয়ে দলের নেতারাই ক্ষুদ্ধ মনোভাব দেখিয়েছে। নির্বাচনি প্রচারনাতেও দলের ভুমিকা ছিল দুর্বল। যথার্থ ভাবেই ভরাডুবি হয়েছে দলের। আগামি নির্বাচনেও মোর্চা গঠন করলে কে কতটা সক্ষম হবেন আর কারা কারা বিএনপি’র সাথে যুক্ত হবেন নিশ্চিত নয়। দল হিসাবে হেফাজতের বিলুপ্তির পর এক মাত্র জামাতই হবে বিএনপি’র সঙ্গী।

করোনা পরিস্থিতি খুব শিঘ্রই বদলে স্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টি হবে মনে হয়না। ফলে রাজনীতির মাঠ গরম করার সব চেষ্টাই হারাবে বি এন পি। দলের কর্মী বাহিনীকে স্বক্রিয় রাখতে নেতাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হচ্ছে।

অপরদিকে দেশের কৃষিখাত সাফল্য দেখিয়েছে। প্রান্তিক চাষীরা অপেক্ষাকৃত ভাল আছে। পদ্মা সেতু সহ দেশের উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। ফলে সরকার সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে রাজনৈতিকভাবে। এমন পরিস্থিতি সরকার বিরোধী আন্দোলনের জন্য অনুকুলে নয়। নৈতিক সাহস এবং নেতৃত্ব দুটোই বিএনপি’র নেই। বেগম জিয়া রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশ নিতে পারছেননা। এমতাবস্থায় দলের নেতারা নেতৃত্ব হীনতায় ভূগছে। কে কখন পোশাক বদল করে অন্য দলে যোগ দেয় সেই সঙ্কাও কম নয়।

এছাড়া, মির্জা ফখরুল দলের একক নেতৃত্ব নিতে পারবেন মনে হয়না। তারেক জিয়া মির্জা ফখরুলকে সেই সুযোগ দিলেও নিয়ন্ত্রন থাকবে তারেক জিয়ার হাতে। মির্জা ফখরুল নিয়ন্ত্রীত হয়ে দলের দায়িত্ব নিবেন মনে হয়না। তাহলে কি বিএনপি বিলুপ্তির দিকে এগুচ্ছে? রাজনৈতিক বিশ্লেশকরা দলটির ভবিষ্যত কিভাবে মূল্যায়ন করবেন সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে বেগম জিয়া বিহীন বিএনপি অকার্যকর সেকথা বলাই বাহুল্য।

আজিজুর রহমান প্রিন্স টরন্টো, কানাডা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *