৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষণটি ছিল তার জীবনের শ্রেষ্ঠ ভাষণ। ১৯ মিনিটের এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু ২৩ বছরের ইতিহাস বর্ননা করেছেন নিখুঁতভাবে। নির্দেশনা দিয়েছেন মুক্তি যুদ্ধের। জাতিকে প্রস্তুত করে দিয়েছেন যুদ্ধের জন্য। বক্তৃতার প্রতিটি শব্দ ছিল যৌক্তিক, প্রাসঙ্গিক এবং সঠিক। ৪ টি শর্ত দিয়েছিলেন পাকিস্তানি শাসকদের জন্য। এই শর্তই ছিল স্বায়ত্ব শাসনের প্রত্যক্ষ ইঙ্গিত। সেই দিন থেকে ইয়াহিয়ার শাসন চলেনি পূর্ব পাকিস্তানে। শুধু গভর্নর হাউস আর ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া কোথাও পাকিস্তানি পতাকা উড়েনি। দেশ চলেছে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। নেতৃত্বের এমন সাহস আর কেউ দেখাতে পারেনি। এই জন্যই বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা।

ইদানিং অনেকেই দাবী করেন তারা নাকি এই বক্তৃতা লিখে দিয়েছেন। কিন্তু সত্যটি হল এর কোনটাই সত্য নয়। এটা ঠিক বঙ্গবন্ধু দিনভর মিটিং করেছেন। অনেকেই অনেক পরামর্শ দিয়েছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছেন ” আমি জনগনের নেতা, আমি জানি কি বলতে হবে”। লেখা বক্তৃতা বঙ্গবন্ধু পড়েননি। যে ছবিটি প্রচার হয় সেখানেও দেখা যায় বঙ্গবন্ধু জনতার দিকে চেয়েই বক্তৃতা করছেন। অসত্য দাবী করে যারা বঙ্গবন্ধুকে হেয় প্রতিপন্ন করেন তারা ইতিহাস বিকৃত করছেন জেনে শুনেই। এরা রাজনীতির আলোচনায় ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কারনেই।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দেশে বিদেশে প্রচুর রিসার্চ হয়েছে। ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়েও আলোচনা হয়েছে প্রচুর। সব বিশ্লেষনেই বঙ্গবন্ধুকে শতাব্দির সেরা নেতৃত্ব দাবী করা হয়েছে। মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও একবারের জন্য বিচলিত হননি বঙ্গবন্ধু। বাঙালীর স্বাধীনতাই ছিল তার একমাত্র লক্ষ্য। লোভ লালসার উর্ধে থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতাই ছিল বঙ্গবন্ধুর একমাত্র লক্ষ্য। যারাই ইতিহাস বলেন কিংবা লেখেন অনুগ্রহ করে সত্য লিখুন। ইতিহাসে মিথ্যা স্থায়ী হয়না। রাজনীতি করুন কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ভুল ব্যখ্যা দিবেন না প্লিজ।


আজিজুর রহমান প্রিন্স, বিশিষ্ট সমাজসেবক, কলামিস্ট, টরন্টো, কানাডা।