বি এন পি ভেঙ্গে যাচ্ছে কথাটি এখন আর গুজব নেই। গনমাধ্যমেই তৃনমূল বি এন পি গঠনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বি এন পি’র জন্য সংবাদটি সূখকর নয়। ইতিমধ্যে দল ভাঙ্গনের আলামতও শুরু হয়ে গেছে। অনেক ত্যগী নেতা স্থান পায়নি নেতৃত্বে। কেউ কেউ বহিষ্কারও হয়েছেন দল থেকে। এই নেতাদের ক্ষোভ পুঞ্জিভুত হলে নতুন দল গঠনের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাবেনা। এমনটি হলে বি এন পি দুর্বল হওয়া ছাড়াও অস্তিত্ব সঙ্কট শুরু হবে। নতুন দল গঠনে যাদের নাম উঠে এসেছে (যদি হয়) তারা নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। তাহলে বি এন পি যে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছে তার কোন গুরত্ব থাকবেনা। সরকার তখন এই নতুন দলকেই বি এন পি’র অংশগ্রহন বলে চালিয়ে দিবে। প্রয়োজনে ছাড় দিয়ে হলেও নির্বাচনকে অংশগ্রহনমূলক প্রমান করবে। তারেক জিয়ার বি এন পি অংশ না নিলেও নির্বাচনে কোন প্রভাব ফেলবেনা। এটাই হবে বি এন পি’র জন্য সবচাইতে বড় পরাজয়।
আরও একটি প্রক্রিয়া চলছে দেশের রাজনীতিতে। জাতীয় পার্টি ১৪ দলের অংশিদার হয়ে বিরোধী দলের আসনে। এখন তারা একক ভাবে নির্বাচন করতে চায়। এখানেও মতভেদ আছে। জাতীয় পার্টি জি এম কাদেরের একক নিয়ন্ত্রনে নেই। জাতীয় পার্টি বি এন পি’র বিদ্রোহী নেতাদের দলে টেনতে চাইবে। সফল হলে বিভক্ত বি এন পি’র সঙ্গে আঁতাত করে তাদের অবস্থান দৃঢ় করতে চাইবে। সে ক্ষেত্রে মূল বি এন পি নিঃসঙ্গ হয়ে পরবে। আওয়ামী লীগেও বিরোধ রয়েছে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হবে সবচাইতে বেশী। সরকারী দলের নেতৃত্ব পেতে এখন থেকেই তোড়জোড় চলছে সবখানে। এই দলেও বহু বিতর্কিত স্বাধীনতা বিরোধীরা ঢুকে পরেছে। ত্যাগী কর্মীরা স্থান পায়নি আওয়ামী লীগেও। আওয়ামী লীগ বি এন পি কিংবা জাতীয় পার্টিকে প্রতিদ্বন্দি মনে করছেনা। আওয়ামী লীগের মূল প্রতিদ্বন্ধী হবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা।
১৩ বছর ক্ষমতায় থাকায় দলের ব্যপ্তি এখন অনেক বড়। সকলেই এম পি হতে ইচ্ছুক। দলের নমিনেশন না পেলে দলের নেতারাই অবস্থান নিবে দলের বিপক্ষে। নেতারা চেষ্টা করেও দলের এই বিভেদ মিটাতে পারবেনা। বিষয়টি এখন কেন্দ্রিয় নেতারাও জানেন। যেকারনে আওয়ামী লীগ এখন থেকেই দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। জাতীয় পার্টি সরকারী দলের বিদ্রোহীদের কাছে টানতে চাইবে। সরকার গঠন সম্ভব না হলেও বিরোধী দলের আসনটিকে ধরে রাখতে চাইবে জাতীয় পার্টি। তৃতীয় কোন রাজনৈতিক শক্তি গঠনের সম্ভাবনা এই মূহুর্তে নেই। দলছুট নেতা আর স্বতন্ত্র প্রর্থীদের দলে টেনে জাতীয় পার্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে চাইবে। বি এন পি যতই শক্ত কথা বলুক দলটির সাংগঠিনিক অবস্থান এখন নড়বড়ে। তার উপর যদি দল ভেঙ্গে যায় তাহলে রাজনীতিতে বি এন পি নিঃসঙ্গ হয়ে পরবে। সরকার বি এন পি’র অবস্থান টের পেয়ে তাদেরকে গুরত্ব দিচ্ছেনা। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের কেউ কেউ জয়ীও হবে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী লীগে স্থান পাবে। এই সুযোগটি আওয়ামী লীগ হাতে রাখবে। আর যদি আওয়ামী লীগ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে যায় তাহলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অবস্থান হবে আ স ম রবের মত। তবে বর্তমানে সরকার যে অবস্থানে রয়েছে কোন ভুল না করলে অন্য কোন দলের সরকার গঠনের সম্ভাবনা প্রায় আসম্ভব। বি এন পি কিংবা জাতীয় পার্টি সব দলই বিরোধী দলের আসনটি নিশ্চিত করতে চায়।
আজিজুর রহমান প্রিন্স, কলামিস্ট ও আওয়ামীলীগ নেতা, টরন্টো, কানাডা।