সাকিব আল হাসান, রৌমারী (কুড়িগ্রাম): একটি ব্রিজের অভাবে অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দশ গ্রামের ৩৫ হাজার মানুষ। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ একটি ব্রিজের দাবি জানিয়ে আসলেও এর কোন সুফল পাননি ভুক্তভোগী এলাকাবাসীরা।
সরেজমিনে জানা জানায়, ১৫ বছর আগে রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সবুজপাড়া গ্রামের পুর্বপাশে আলমের বাড়ী সংলগ্ন খালের উপর এলজিইডির অর্থায়নে একটি স্লুইসগেট ও খালের বাকি অংশ মাটি ভরাট করে সড়ক মেরামত করা হয়। পরের বছরেই বন্যায় স্লুইসগেটটি অক্ষত থাকলেও সড়কের মাটি ভরাট অংশটুকু আবারও ভেঙ্গে যায়। এর কয়েক বছর পর ওই স্থানে দুইবার মাটি ভরাট করে পুনঃমেরামত করা হলেও ২০১৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের ওই অংশটুকু ভেঙ্গে যায়। যোগাযোগ বিছিন্ন ১০ গ্রামের মানুষের চলাচল। এলাকাবাসীর উদ্দ্যোগে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করা হলেও সড়কটি পুন:সংস্কার বা সেতু নির্মানে কোন উদ্দ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই নিরুপায় হয়ে গ্রামবাসীরা নিজেদের চাঁদার অর্থায়নে নির্মিত বাঁশের এ সাঁকো যুগের পর যুগ ধরেই ভাঙ্গা গড়ার মধ্যে দিয়ে চলছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ, প্রায় গত দেড় যুগ ধরে জন প্রতিনিধিরা সাঁকো মেরামতের আশ্বাস দিয়ে ভোট নিলেও এখন পর্যন্ত সাঁকোটি নির্মাণে কোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেননি। প্রতিবারই নিজেদের উদ্যোগেই বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি সাঁকোটি মেরামত করতে হচ্ছে। কবে ব্রিজ হবে, তাও জানেন না কেউ।
রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু হোরায়রা বলেন, বাঁশের সাঁকো দিয়ে চর বামনের চর, খাঠিয়ামারী, সুতিরপাড়, মোল্লারচর সহ প্রায় দশটি গ্রাম থেকে আমার বিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী পড়তে আসে। ব্রিজ না থাকার কারনে অনেক সময় শিক্ষার্থীদের হাত থেকে বই খাতা পড়ে পানিতে ভিজে যায়। খাঠিয়ামারী গ্রামের সাদ্দাম হোসেন, রতনপুর গ্রামের শাহজাহান সিরাজ, চর বামনের চর গ্রামের সাইদুর খলিফা বলেন, ওপারে স্কুল-বাজার, জনবসতি সবই আছে। এপাড়েও স্কুল ও মানুষের বসতি রয়েছে। কাজের প্রয়োজনে দুই পারে মানুষই পারাপার হয় কিন্তু এখানে কোন ব্রিজ হয়নি। চেয়ারম্যান আসে, চেয়ারম্যান যায়, কেউ আর ব্রিজ করে দেয়না। খালির ভোটের সময় ভোট নেয়।
এ বিষয়ে ৪নং রৌমারী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রাজ্জাক জানান, সবুজপাড়া গ্রামের পুর্বপাশে আলমের বাড়ী সংলগ্ন খালের উপর যে বাঁশের সাঁকো রয়েছে সেখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে দশ গ্রামের বাসিন্দারা এর সুফল ভোগ করবে। ব্রিজটি শীঘ্রই যাতে নির্মাণ হয় সে ব্যাপারে তিনি জোর দাবি জানান।