তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: দেশে এবং প্রতিটি জেলায় উপজেলায় কর্মসংস্থান এখন ‘গিগ অর্থনীতির’ (gig economy) প্রসার ঘটেছে। সেই আলোকেই  উবার রাইড শেয়ারিং যাতায়াতব্যবস্থা প্রথমে বিচার করতে হবে এগিয়ে।

গিগ ইকোনমি হচ্ছে একধরনের খণ্ডকালীন কাজের ব্যবস্থা। সেখানে অনেক প্রতিষ্ঠান স্থায়ী কর্মী নিয়োগ না করে স্বল্প সময়ের জন্য কিছু বিশেষজ্ঞ কর্মী বিশেষ শর্তে নিয়োগ করে। তাঁদের কাজের ধরাবাঁধা সময় হয়তো থাকে না। কর্মী নির্দিষ্ট সময়ে চাহিদা অনুযায়ী কাজ করে দেন। সকালে হয়তো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি লেকচার দিলেন, দুপুরে কিছুক্ষণ উবার অ্যাপে যুক্ত হয়ে কয়েক ঘণ্টা কাজ করলেন, সন্ধ্যায় কিছুক্ষণ আউটসোর্সিংয়ের কাজ করলেন। এটাই হলো গিগ ইকোনমি। কর্মীর প্রতিটি কাজই সমাজের সবাই সম্মানের চোখে দেখেন। কর্মী খুশি। আয় বেশি। তাঁর কাজের স্বাধীনতাও বেশি।

মৌলভীবাজার জেলার জরিপে দেখা গেছে, এ জেলার মানুষ তাদের সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করছেন বেকারত্ব আর দ্বিতীয়টি যাতায়াত সমস্যা। উবার রাইড শেয়ারিং ব্যবস্থা এই দুটি সমস্যার সমাধানে অবদান রাখছে। এখনই অনেক তরুণের খণ্ডকালীন কাজ ও পর্যাপ্ত আয়ের ব্যবস্থা হচ্ছে। অন্যদিকে গ্ৰামে, শহরগুলোতে যাতায়াতের ঝুটঝামেলা কমছে। রাইড শেয়ারিংয়ে যাতায়াতের ব্যয়ও সাধ্যের মধ্যে। তাই পছন্দের তালিকায় উবারকে যুক্ত করে রাখছে।

উবার রাইড শেয়ারিং নীতিমালা সবার কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করার জন্য জেলা জুড়ে প্রয়োজনীয় সংশোধন বা পরামর্শের জন্য উবার চায় সাধারণ মানুষের কথা জানতে, শুনতে।

জেলার এক চায়ের দোকানে বসে ক’জন গল্প করছিলেন তাদের ঐ গল্পের মাঝে কান পেতে শুনতে থাকি। ঐ মূহূর্তে বন্ধুদের মাঝে গল্পের কথা বলি। এক জন অন্য জনকে বলছে সেদিন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ডাকলাম। মৌলভীবাজার থেকে শ্রীমঙ্গল কতটুকু দূরের গন্তব্যে যেতে ভাড়া চাইলেন ২৫০ টাকা। বললাম, উবারে তো ১ কিলোমিটার ৭ টাকায় যাওয়া যায়। অটোরিকশাচালক বললেন, ঠিক আছে ২০০ টাকা।

পরে তিনি নিজেই বলেন, ভাই–আমিও উবারে যোগ দিমু। যাত্রীও খুশি, চালক ও খুশি। লাভও বেশি। ভাড়া নিয়া ঝগড়াঝাঁটি আর ভালো লাগে না।’সরকার যে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলে, পরিবহনে এই নবাগত উবার রাইড শেয়ারিং ব্যবস্থা তারই সুফল। সরকার বোঝে যে রাইড শেয়ারিং ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার গুরুত্ব রয়েছে। তাই সরকার চায় এই ব্যবস্থা চলুক।

নিরাপত্তার স্বার্থে যাত্রীদের রাইড শেয়ারিংয়ের সব তথ্য রাখে। ডেটা সিকিউরিটি ও স্টোরেজের ব্যবস্থা আছে। সার্ভারে সব তথ্য সংরক্ষণ ও নিরাপদে তথ্য রাখছে কখনো কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখি হলে যেভাবে সহজেই সমাধানে বদ্ধ পরিকর।

এখানে আরো লক্ষণীয় বিষয় যারা কাজ করছেন এঁদের সবাই তরুণ। তাঁদের চোখেমুখে অনেক স্বপ্ন। মনে হয় উন্নত বাংলাদেশ তাঁদের হাতের মুঠোয়। এটাই তো তারুণ্যের ধর্ম।

রাইড শেয়ারিং এ যানবাহনের মালিক, যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলের প্রতিনিধিদের মধ্যে সংলাপ হতে পারে। জেলায় উবার রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান ই-পরিবহনে বিপ্লব ঘটাতে পারে। একে দ্রুত এগিয়ে নেওয়া আমাদের কর্তব্য।