হুমায়ুন কবির, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার গান্ডিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্র বিষ্ণু দেবকে শাস্তি স্বরুপ বিকৃতভাবে মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তসলিমউদ্দিনের বিরুদ্ধে। গত সোমবার দুপুরে ইউএনও বরাবরে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রের বাবা বিনোদ দেব। পরদিন মঙ্গলবার অভিযোগের তদন্তের জন্য প্রধান শিক্ষক, নির্যাতনের শিকার স্কুল ছাত্র ও তার অভিভাবকদের ইউএনও’র কার্যালয়ের উপস্থিত হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন ইউএনও।

বিষ্ণুর পিতা বিনোদ দেব বলেন, ঘটনার দিন স্কুল ছুটি হওয়ার পরও বিষ্ণু বাড়িতে না আসায় খোঁজাখুজি শুরু করি। পরে জানতে পারি যে, তার মাথার চুল কেটে দিয়ে প্রধান শিক্ষক ক্লাশে আবদ্ধ করে রেখেছেন। আমি ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। সোমবার সকালে আমি স্কুলে গিয়ে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক তার লোকজনকে নিয়ে আমাকে হুমকি দেন। পরে আমি ছেলেকে নিয়ে ইউএনও’র কাছে আসি। তিনি ন্যায় বিচার করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির আরেক ছাত্র মোমিন জানান, আমি ও সহপাঠী জাহিদ হাসানের চুল আঁকাবাকা করে কেটে দিয়ে প্রধান শিক্ষক সকল ছাত্রকে বলেছেন, আমার কাছে ৭টি কাঁচি রয়েছে, কেউ যদি একটু চুল বড় রাখে তাহলে এমনভাবে কেটে দেবো। আমরা ভয়ে কয়েকজন মাথা ন্যাড়া করে নিয়েছি।

সংবাদকর্মীরা গত সোমবার দুপুরে ঘটনার বক্তব্য নেওয়ার জন্য গেলে প্রধান শিক্ষক তসলিম উদ্দীন দ্রুত স্কুল ত্যাগ করে বেরিয়ে যান। অন্যান্য সহকারী শিক্ষকরা গতকাল ছিলেন না বলে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি।পরে প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অতুল চন্দ্র সিনহা জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের মাথার চুল বিকৃতভাবে কেটে দেওয়া শিক্ষকতা চাকুরীর নীতিমালা পরিপন্থী। বিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা ওই শিক্ষককে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো।
বালিয়াডাঙ্গী ইউএনও যোবায়ের হোসেন বলেন, একজন অভিভাবক পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুলছাত্রের চুল বিকৃতভাবে কেটে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। ১৬ আগস্ট বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ওই প্রধান শিক্ষককে আমার কার্যালয়ে উপস্থিত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। ওই প্রধান শিক্ষকের দোষ প্রমাণিত হলে শাস্তির আওতায় আনা হবে।