আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দক্ষিন এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কায় মুসলিম নারীদের বোরকা পরা নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। এছাড়া এক হাজারেরও বেশি ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) বন্ধ করবে দেশটির সরকার। গতকাল শনিবার দেশটির জন নিরাপত্তামন্ত্রী সরৎ বিরাসেকেরা এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন।

লঙ্কান নিরাপত্তামন্ত্রী সরৎ বিরাসেকেরা জানান, শুক্রবার তিনি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য একটি নথিতে স্বাক্ষর করেছেন। যাতে জাতীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় মুসলিম নারীদের পুরো মুখ ঢাকা পোশাক নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি বলেন, অতীতে আমাদের দেশে মুসলিম নারী ও মেয়েরা কখনও বোরকা পরেননি। এটি একটি ধর্মীয় চরমপন্থার প্রতীক, যা সম্প্রতি হাজির হয়েছে। আমরা অবশ্যই তা নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছি।

মন্ত্রী বিরাসেকারা জানান, সরকার এক হাজারেরও বেশি মাদরাসা বন্ধ করে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। এসব মাদ্রাসা শ্রীলঙ্কার জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসরণ করছে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘কেউ একটা স্কুল খুলেই যা ইচ্ছা তাই বাচ্চাদের পড়াতে পারেন না।’

শ্রীলঙ্কা সরকারের এমন সিদ্ধান্তের আগে মহামারির শুরুতে করোনায় মৃত মুসলিমদের দাফন নিষিদ্ধ করে। মুসলিমদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মৃতদের দাফনের বদলে শবদাহ করা হয়। এই বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সমালোচনা ও নিন্দার মুখে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

এদিকে এমন পদক্ষেপের ফলে দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে বিশ্লেষক মহল।

এর আগে ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কায় ইসলামী জঙ্গিদের বোমা হামলায় আড়াইশ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর দেশটিতে বোরকা পরা সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

ওই বছরের শেষ দিকে ধর্মীয় চরমপন্থা মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন গটাবায়া রাজাপাকসে। এর আগে তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তামিল বিদ্রোহ দমনের জন্য পরিচিত ছিলেন। গৃহযুদ্ধের সময় তার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। যদিও তিনি তখন এসব অস্বীকার করেছেন। সূত্র: রয়টার্স। 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *