কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে অস্বাভিকভাবে বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি। পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে গতকাল পানির উচ্চতা ছিল ৮ দশমিক ০৯ মিটার। বন্যার আশংকা করছে এলাকাবাসী।
পাবনার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উত্তরাঞ্চল পানি পরিমাপক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় পাকশীর পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি পরিমাপ করে প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ০১১ কিউসেক। পানির এই বৃদ্ধি অস্বাভাবিক বলে জানান তিনি।
পানি পরিমাপ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গত বছর এই সময়ে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৫৩ মিটার। এ বছর এই সময়ে পদ্মার পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বর্ষার আগেই বিপদসীমার কাছাকাছি গিয়ে ঠেকতে পারে। এদিকে পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার অসংখ্য কৃষকের আবাদ করা ফসল এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে। ভেড়ামারা চর গোলাপ নগর এলাকার চরে আবাদ করা বেশিরভাগ বাদাম ক্ষেত এখন পানির নিচে।
পদ্মায় গিয়ে দেখা গেছে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি স্প্যানের মধ্যে ১৩টির নিচেই এখন হুহু করে স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। এই সময়ে অন্যান্য বছর ব্রিজের অর্ধেকের নিচেই ধু-ধু বালুচর থাকে। অথচ এবার পানিতে ভরে গেছে নদীর দু’কূল। প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, ‘৮৮ সালের পর পদ্মা নদীর এই রূপ আর দেখেননি তারা।
নদী ও পানি গবেষক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, যমুনা ও পদ্মার উৎস যমুনাত্রী ও গঙ্গাত্রীর প্রধান হিমবাহ হিমালয় পর্বতের বরফ গলা পাহাড়ি ঢলের কারণে এই সময়ে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শায়খুল ইসলামের দেওয়া তথ্য মতে, এ মৌসুমে পদ্মার চরাঞ্চলে বিভিন্ন ফসলের আবাদ হয়েছে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে। নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার আবাদি ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।
কৃষক আব্দুল করিম জানান, এ বছর তেমন বন্যা না হওয়ায় চরের ৫ বিঘা জমিতে আগাম মাষকলাই চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু পদ্মার পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ফসল তলিয়ে গেছে।
উত্তরাঞ্চল পানি পরিমাপক বিভাগ ও পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম জানান, গতকাল বিকেল ৩টায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সর্বশেষ পানি পরিমাপ করে পদ্মা নদীতে ১ লাখ ৯১ হাজার ৩১১ কিউসেক পানি পাওয়া গেছে। গত বছর এই সময়ে পানিপ্রবাহ ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ০৬৮ কিউসেক।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *