আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ গতকাল মঙ্গলবার (২২ জুন) সারা বিশ্বের ৪ কোটি ১০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি প্রদান করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সংস্থা। খবর-রয়টার্সের।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের গতকাল মঙ্গলবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইতালির রোমভিত্তিক জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক অঙ্গ সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেছেন, সারা বিশ্বের ৪ কোটি ১০ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ছাড়া আরও পাঁচ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মতো দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন। বর্তমানে চারটি দেশে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে চার কোটি ১০ লাখের মতো মানুষের দুয়ারে দুর্ভিক্ষ কড়া নাড়ছে। ঝুঁকিতে থাকা ৪৩ দেশের এসব মানুষের জন্য আমাদের জরুরিভিত্তিতে ৬০০ কোটি ডলার প্রয়োজন।

সম্পূর্ণরূপে স্বেচ্ছায় অনুদানের অর্থ দ্বারা পরিচালিত এই সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে এ জন্য দ্রুত তহবিলের যোগান চেয়ে আরও বলেন, আমাদের তহবিল (ফান্ডিং) দরকার এবং এটা আমাদের দরকার এখনই।

রয়টার্স জাতিসংঘের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে বিগত কয়েক দশক ধরে প্রতি বেলা খাবার পায় না এমন মানুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পর দেশে দেশে সংঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০১৬ সাল থেকে সেই সংখ্যাটা আবার বাড়তে শুরু করেছে।

ডব্লিউএফপির হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা মানুষের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৭০ লাখ। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে এই সংখ্যাটা দ্রুত বাড়তে থাকে। আর চলতি বছর তা ৪ কোটি ছাড়িয়েছে। আর গত মে মাসে বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের দাম এক দশকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়। গত মাসে বিশ্বে দানাদার খাবার, তেল, দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস এবং চিনির মতো জরুরি খাদ্যপণ্যের দাম এক বছর আগের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে। লেবানন, নাইজেরিয়া, সুদান, ভেনেজুয়েলা এবং জিম্বাবুয়ের মতো দেশে মুদ্রার অবমূল্যায়ন এই চাপগুলোকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং খাদ্যপণ্যের দাম আরও বেশি করে বেড়েছে। আর এতে করে বিশ্বে খাদ্য সুরক্ষায় দেখা দিয়েছে এই বিপর্যয়।

ডব্লিউএফপি আরো জানিয়েছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৬৯ কোটি মানুষ এখনো প্রতিদিন রাতে কোনো খাবার না খেয়ে ঘুমাতে যান।

উল্লেখ্য, ২০২০ সাল থেকে আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া, মাদাগাস্কার, দক্ষিণ সুদান এবং মধ্যপ্রাচ্যের ইয়েমেনের পাশাপাশি আফ্রিকার আরও দুই দেশ নাইজেরিয়া এবং বুরকিনা ফাসোর কিছু কিছু এলাকায় এখনও দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি রয়েছে।

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *