তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ সীমান্ত জেলা মৌলভীবাজারে করোনার সংক্রমণের উর্ধ্বগতি ক্রমেই বেড়ে চলছে। সর্ব শেষ মঙ্গলবার ২৯ জুন রাত ৮ টায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিটের ৫০ টি বেডের মধ্যে ৪৭ জন ভর্তি রয়েছেন। আইসিইউ যে ৫টি বেড ছিল তাও খালি নেই।

গত ২৪ ঘন্টায় ১১২ টি নমুনা পরীক্ষায় পাঠালে ৪৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুযায়ী আক্রান্তের হার ৪১ শতাংশ ।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিনই জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন জেলার বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মৌলভীবাজার পৌরসভা করোনা নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণকে সচেতন করতে প্রচার-প্রচারণা ও মাস্ক বিতরণ করছে।

মৌলভীবাজার পৌর মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান জানান, জেলার করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে দ্রুত চলে যাচ্ছে। হাসপাতালের করোনা ইউনিট প্রায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। আইসিইতে একটি বেডও খালি নেই। তিনি সকলকে সচেতন ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার আহবান করেন। তিনি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে না রাখতে পারলে মৌলভীবাজারে ভয়াবহ রুপ ধারণ করতে পারে।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার বিএমএ সভাপতি ডাঃ সাব্বির হোসেন খান জানান, হঠাৎ করে করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যমান কোভিড ওয়ার্ডের নিকটবর্তী একটি ওয়ার্ডকে ২য় ওয়ার্ড হিসাবে ঘোষণা করার জন্য সিভিল সার্জনকে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। ওই ২য় ওয়ার্ডে বুধবার থেকে কোভিড ও সন্ধেহজনক কোভিড রোগী ভর্তি হতে পারে।

এদিকে সীমান্ত জেলা মৌলভীবাজারে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান তাঁর ফেসবুকে ট্যাটাস দিয়ে মৌলভীবাজারবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবায়ন করেন। তিনি অত্যন্ত শংকার বিষয় উল্লেখ করে বলেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য ডেডিকেটেড বেডের প্রায় ৯০% পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। আইসিইউ বেড সবগুলি সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে এবং সিলেট বিভাগে কোথাও কোন আইসিইউ বেড খালি নেই।

জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুর্শেদ জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ১১২ টি নমুনা পরীক্ষায় পাঠালে ৪৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা অনুযায়ী আক্রান্তের হার ৪১ শতাংশ । এ পর্যন্ত জেলায় ২ হাজার ৯‘শ ৭১ জনের শরীরে করোনা সনাক্ত হয়। সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৬ শত ৩২ জন। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ৪১ জন।

সরকারী হিসেবে করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেন ৩৫ জন। তবে করোনায় আক্রান্ত মৃত্যুবরণকারী পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে প্রাপ্ত তথ্যে বে-সরকাররি হিসেবে জেলার বাহিরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৫ জন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *