দিনাজপুর প্রতিনিধি : নবাবগঞ্জ থানার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা ২১ বছরের তরুন মোঃ রিয়াজুল ইসলাম। ২০০৯ সালে ভালোবেসে বিয়ে করেন সিরাজগঞ্জের সেতুকে। সুখের সংসারে ২০১৫ সালে উক্ত দম্পতির কোল আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করে ফুটফুটে সন্তান আদনান সনদ। পরিবারটিতে সুখের কোথাও কোন ঘাটতি ছিলো না। শ্বশুর-শ্বাশুড়ী,স্বামী সন্তান নিয়ে সুখেই ছিলেন সেতু। ২০১৮ সালে নেমে আসে তার জীবনে অমাবস্যার ঘোড় অন্ধকার। ডিভোর্সি এবং কন্যা সন্তানের জননী বিজিবি ক্যাম্প, ফুলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সানজিদা আক্তার প্রিয়া নামে এক সুন্দরী নারীর সাথে পরিচয় হয় রিয়াজুলের। এক পর্যায়ে নিজের অসহায়ত্ব কাটাতে রিয়াজুলকে পরকীয়া সম্পর্কের ফাঁদে ফেলেন প্রিয়া। স্ত্রী- সন্তান রেখে রিয়াজুল ও সেই ফাঁদে পা বাড়িয়ে সম্পর্কের গভীরতা বাড়াতে অগ্রসর হন নিদারুণ প্রণয়ের দিকে। স্ত্রী, নিস্পাপ সন্তানের আর্তনাদ, পিতা-মাতার বাঁধা সকল কিছুর মায়ার জ্বলেও আটকাতে পারেনি তাদের প্রণয়। বরং স্ত্রীকে তুচ্ছ বিষয়গুলি নিয়ে মারপিট ও শারীরিক নির্যাতন করতো।
এক পর্যায়ে ২০২০ সালে সবার চোঁখের জ্বল জলাঞ্জলী দিয়ে বিয়ে করেন কন্যা সন্তানের জননী এবং ডিভোর্সি  সানজিদা আক্তার প্রিয়া নামে উক্ত নারীকে। সবকিছু জেনেও সেতু তার স্বামীকে ফিরে পাবার আশায় শ্বশুর-শ্বাশুড়ী,পিতা-মাতা আত্মীয় স্বজনের পরামর্শে নিজের সন্তান ও ১২ বছরের সাজানো সংসারের দিকে তাকিয়ে রিয়াজুলের বাড়িতেই অবস্থান করেন দীর্ঘদিন।
এরপর পারিবারিক,পারিপার্শ্বিক চাপে এবং প্রথম স্ত্রী সেতু আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালে  একই বছর দ্বিতীয় স্ত্রী সানজিদা প্রিয়াকে তালাক প্রদান করে এবং নিজের ভুল স্বীকার করে অধিক বিশ্বস্ততার জন্য সেতুর সহিত পুনরায় ২০ লক্ষ টাকা দেনমোহরের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্ত্রী সন্তান ও পিতামাতার নিকট ফিরে আসে। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই উক্ত তালাক কার্যকর না করে পুনরায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী সানজিদা প্রিয়াকে গ্রহণ করে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস শুরু করে। সন্তান সহ অসহায় হয়ে পরেন তার প্রথম স্ত্রী সেতু। অপেক্ষা করেও স্বামী আর ফিরে না আসায় সন্তানসহ বাবার বাসা সিরাজগঞ্জে চলে আসেন।
অপরদিকে রিয়াজুলও তার দ্বিতীয় স্ত্রী সানজিদা প্রিয়া এবং তার আগের পক্ষের কন্যা সন্তানসহ প্রিয়ার বাবার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন।পিত্রালয়ে থাকা সেতু এবং তার শিশু সন্তান আদনান সনদের কোন কান্না আবেগ,ভালোবাসা,পারিবারিক বন্ধন কোন কিছুতেই মন গলেনি রিয়াজুলের। ০৭ মাস পেরিয়ে গেলেও স্ত্রী সন্তানের কোন খোঁজ না নেওয়ায়, মুসলিম পারিবারিক আইন নারী নির্যাতন ও বিনা অনুমতিতে বিয়ের অপরাধে বিজ্ঞ আদালত, সিরাজগঞ্জে মামলা চলিতেছে যা বিচারাধীন রয়েছে।
উক্ত মামলায় গত ০৭-১০-২১ ইং তারিখ পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিজিবি ক্যাম্প, এলাকা ফুলবাড়ি, দিনাজপুর রিয়াজুলের শ্বশুরালয় থেকে ওয়ারেন্টমূলে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করে। তার প্রথম স্ত্রী এবং নিজ সন্তান এখনও অপেক্ষার প্রহর গুনছে তাকে ফিরে পাওয়ার আশায়।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *