ফুলবাড়ীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু

অলিউর রহমান নয়ন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। নিহত ওই নেতার নাম বাধন সরকার (১৭)। তিনি উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কাশিপুর বাজার শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, কাশিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র এবং উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের দুলাল সরকারের ছেলে।

জানা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে দশটার দিকে নিজ বাড়ীতে বিদ্যুতের ছেড়া তার সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুত স্পৃষ্ট হয়ে মারাত্বক আহত হন বাধন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুতে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক বিদ্যুত স্পৃষ্টে বাধনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় জানাজা শেষে তার লাশ পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হয়েছে।

গরু কেনার অর্থ নেই বলে দুই যুগ ধরে কাঠের ঘানি টানছেন স্বামী-স্ত্রী

মোঃ পারভেজ সরকার, সিরাজগঞ্জঃ গরু কেনার অর্থ নেই। সংসার চালাতে প্রায় ২৪ বছর ধরে খাঁটি সরিষার তেল তৈরিতে ৬ মণ ওজনের কাঠের ঘানি টানছেন সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার আবুল কালাম আজাদ (৫৫) ও তার স্ত্রী আসমা খাতুন (৪৫)।দশ কেজি সরিষা থেকে ৩ কেজি তেল বের করতে ঘানির জোয়ালে এই দম্পতির হাঁটতে হয় ৯ থেকে ১০ কিলোমিটার। এভাবেই দুই যুগ ধরে ঘানি টানছেন দরিদ্র স্বামী-স্ত্রী। একদিন ঘানি না ঘোরালে সংসারের চাকা ঘোরে না তাদের। এভাবে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘানি টেনে চলছে তাদের জীবন সংসার।

গেলো বৃহস্পতিবার (৪ মে) সকালে রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের শ্রী দাসগাঁতী গ্রামের হতদরিদ্র আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে দেখা যায় গরুর বদলে ৬ মণ ওজনের ঘানি টানছেন এই দম্পতি। সরিষা থেকে তেল বের করতে দম্পতিকে ঘানি টানতে হয় একটানা আট ঘণ্টা। সেই তেল ও খৈল বিক্রি করে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা আয় হয়। এই দিয়ে চলে তাদের সংসার। কোন সঞ্চয় থাকে না। এই অমানুষিক পরিশ্রমের মাধ্যমেই চলছে তাদের সংসারের চাকা।

দীর্ঘদিন ধরে তাদের অমানুষিক পরিশ্রমে নজর পড়েনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিত্তবানদের। তাদের কপালে আজও জোটেনি সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা। ভাঙা ঘরে সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। দুই সন্তান বড় হয়েবিয়ে করে আলাদা সংসার করছেন। বাবা মায়ের ঘানি ভাঙানো আয়ে তারা বড় হলেও এখন তাদের দায়িত্ব নিচ্ছে না। বাধ্য হয়ে এই দম্পতি ঘানির বোঝা টেনে চলেছে নীরবে। কবে তারা এই বোঝা থেকে মুক্ত হবে তা জানা নেই তাদের।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে এখন ঠিক মতো ঘানি টানতে পারি না। এই ঘানি টেনেই তিনি ৬ সন্তানকে মানুষ করেছেন। প্রতিদিন ফজর আজান থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত তারা দুই দফায় ১০ কেজি সরিষা ঘানিতেভাঙান। এ থেকে ৩ কেজি তেল বের হয়। সেই তেল ৪শ’ টাকা কেজি দরে বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করেন। আর ৫০ টাকা কেজি দরে খৈল বিক্রি করেন। এ থেকে প্রতিদিন তাদের ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা আয় হয়। তা দিয়ে এখন ৩ ছেলে এবং স্বামী স্ত্রীর খাবার জোটে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে এখন তাও সম্ভব হচ্ছে না। খুব কষ্টে দিন পার করছেন তারা।

কালামের স্ত্রী আসমা খাতুন বলেন, বিয়ের পর থেকে ঘানি টেনে যাচ্ছি। বয়স বেড়ে যাওয়ায় এখন আগের মতো ভারী ঘানি টানতে পারি না। মাথা ঘোরে। পা চলে না। মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়ি। তবুও পেটের তাগিদে ঘানি টানতে হয়। পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম নান্নু বলেন, সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে স্বামী-স্ত্রী দুইজন মিলে ঘানি টানছেন। পরিষদ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা তৃপ্তি কণা মন্ডল বলেন, ঘানি টানার বিষয়টি অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থল পরির্দশনে গিয়েছিলাম। শিগগিরই তাদের সহযোগীতা করা হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা তাদের শিগগিরই সহযোগিতা করবো।

আবারও ধরা পড়লো লজ্জাবতী বানর!

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আবারও একটি লজ্জাবতী বানর ধরা পড়েছে। গত সপ্তাহের  সোমবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার চুকারপুঞ্জি গ্রামের লোকজন বানরটিকে আটক করেন। পরে মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বানরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১ মে রাতে উপজেলার দক্ষিণভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন লজ্জাবতী বানরকে আটক করেন। পরে ওইদিন রাতেই বানরটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। পরিবেশকর্মীরা বলছেন, বনজঙ্গল ও গাছপালা উজাড় হওয়ায় প্রায় সময় খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে বেরিয়ে এসে স্থানীয়দের হাতে লজ্জাবতী ধরা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে। এসব বন্যপ্রাণীকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সচেতন করতে হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার উপজেলার চুকারপুঞ্জি গ্রামের কালভার্টের পাশে স্থানীয় লোকজন একটি লজ্জাবতি বানরকে দেখতে পান। পরে তারা সেটিকে ধরে এলাকার বাসিন্দা আকমল আলীর বাড়িতে আটকে রাখেন। বানরটি কোনো খাবার না খাওয়ায় মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে আকমল আলীর বাড়ির লোকজন বানরটিকে ছেড়ে দেন।

চুকারপুঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা ছানোয়ার হোসেন বলেন, সোমবার সন্ধ্যার সময় হঠাৎ বানরটিকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন আটক করেন। পরে একজনের বাড়িতে বানরটিকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বানরটি না খাওয়ায় মঙ্গলবার রাতের দিকে বাড়ির লোকজন সেটিকে ছেড়ে দিয়েছেন। ছাড়ার পর আবার গাছে উঠে চলে গেছে।

স্থানীয় এক পরিবেশকর্মী বুধবার বিকেলে বলেন, প্রায়সময় কোথাও না কোথাও লজ্জাবতি বানর ধরা পড়ছে। কারণ অবাধে বনজঙ্গল ও গাছপালা কেটে উজাড় হচ্ছে। এর ফলে এসব প্রাণি আবাসস্থল হারাচ্ছে। খাদ্য সংকটে পড়ছে। এতে খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে লোকালয়ে চলে এসে এসব প্রাণী স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে।

তবে মানুষজন আগের চেয়ে সচেতন হচ্ছে, তাই কেউ এসব প্রাণিকে ধরে আবার ছেড়ে দিচ্ছেন। এসব বন্যপ্রাণীকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সচেতন করতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।  বড়লেখা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন দাস বলেন, লজ্জাবতী বানর নিশাচর প্রাণি। পরিবেশের জন্যও ভালো। কারও ক্ষতি করেনা। এসব প্রাণিদের ধরা উচিত নয়। ধরা পড়লে আমাদের দ্রুত জানাবেন। আমরা উদ্ধার করব। আর কেউ যদি ধরে হত্যা করে তবে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নেত্রকোণায় কৃষকের পাকা ধান কেটে দিলো সেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা

মো. কামরুজ্জামান, নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধিঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে উৎসব মুখর পরিবেশে নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের বুড়াখালী গ্রামে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ সারোয়ার মোর্শেদ জাস্টিসের নেতৃত্বে  কৃষকের ক্ষেতের পাকা ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে সেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা।

ধান কাটা উৎসব উপলক্ষে অনুষ্ঠিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিবিদ সারোয়ার মোর্শেদ  জাস্টিস বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ দেশরত্ন শেখ হাসিনা অত্যন্ত কৃষি ও কৃষকবান্ধব। কৃষকের প্রতি রয়েছে তাঁর পরম দরদ ও মমতা। তিনি চান কৃষিকাজ করে কৃষক লাভবান হোক, কৃষকের জীবনমানের উন্নয়ন হোক, কৃষক উন্নত সমৃদ্ধ জীবন পাক। কৃষকরাই অর্থনীতির প্রাণশক্তি। তাই তিনি কৃষিকে লাভজনক ও আধুনিক করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।’

কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও কৃচ্ছতা নীতির মধ্যেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কৃষিক্ষেত্রে বিশাল পরিমাণ ভর্তুকি দিয়েছেন।  এটি সারা বিশ্বে এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম আজাদ বকুলের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি অফিসার রাকিবুল হাসান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মিল্টন কান্তি কর, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মোঃ মুখলেছুর রহমান, সহ-সভাপতি এসএম তৌফিক রিমন, পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য এসএম ইকবাল শামীম,জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসিব ইবনে হান্নার রিদম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ জনশক্তি ও কর্মসংস্থান সম্পাদক আরেফিন কায়ছার শুভ, সেচ্ছাসেবকলীগের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন, মোঃ রুবেল সহ স্থানীয় কৃষকলীগের নেতাকর্মীরা।

শার্শায় অভিমান করে এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা

জহিরুল ইসলাম, যশোর জেলা প্রতিনিধি: যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বেনাপোলে ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে তন্বী মন্ডল (১৫) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে বালুন্ডা গ্রামের শ্রীরাম মন্ডলের কন্যা। গত বুধবার (৩ মে) রাত্রে বেনাপোল পোর্ট থানাধীন বালুন্ডা গ্রামের জেলে পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত্রে পড়ার সময় মোবাইল ব্যবহার করছিলো সে জন্য তার মা শ্রীমতি বিলাসী রানী তাকে বকাবকি করে। এতে সে মায়ের ওপর অভিমান করে আত্নহত্যা করে।
তন্বী মন্ডলের মা ভোরে ঘুম থেকে উঠে ডাকাডাকি করলে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালা দিয়ে ঘরের মধ্যে ফ্যানের সাথে মেয়েকে ঝুলতে দেখেন। এরপর পরিবারের লোকজন সহ প্রতিবেশিদের সহোযোগিতায় লাশ নিচে নামায়।

বেনাপোল পৌর্টথানার (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, বালুন্ডা গ্রাম থেকে তন্বী মন্ডল (১৫) এস এস সি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় আনার পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। থানায় অপমৃত্যু জনিত মামলা হয়েছে। কেন কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গঙ্গাচড়ায় কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন বিতরণ

সিয়াম রাজ, গঙ্গাচড়া (রংপুর) সংবাদদাতা: রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কিছুদিনের মধ্যেই পুরোদমে আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হবে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়ায় ক্ষেতের ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। শ্রমিক সংকট দূর করতে কৃষকদের মাঝে সরকারি ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করেছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। গেলো সপ্তাহের বুধবার উপজেলা চত্ত্বরে স্থানীয় এক জন কৃষকের মাঝে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের বিতরণ করা হয়।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, একটি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের মূল্য ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও আবেদিন ইকুইপমেন্ট লিমিটেডের একটিকম্বাইন হারভেস্টার মেশিনের মুল্য । সরকারের ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এ মেশিন দিয়ে ধান কাটা, ঝাড়া, মাড়াই ও বস্তায় ভরা যাবে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিচালন বাজেটের আওতায় উন্নয়ন সহায়তার (সরকারি ভর্তুকি) মাধ্যমে ক্রয়কৃত কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন পাওয়া কৃষক হলেন উপজেলার গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের ধামুর গ্রামের মোক্তারুল ইসলামক।

কম্বাইন্ড হারভেস্টার রিতরণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাজু আহম্মেদ লাল। এ সময় উপজেলা উপজেলা কৃষি অফিসার মারুফা ইফতেখার সিদ্দিকা, সমাজ সেবা অফিসার মোছাদেকুর রহমান, আবেদিন ইকুইপমেন্ট লিমিটেডের টেরীটরি ম্যানেজার পতিরাম দেব শর্মা, উপজেলক কৃষি উপসহকারী উদ্ভিদসহকারী অফিসার হাবিবুর রহমান গঙ্গাচড়া ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক উপস্থিত ছিলেন।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগে ব্যয় বাড়ছে ৩০১ কোটি টাকা

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্কঃ পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যয় ৩০১ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। আজ বুধবার (৩ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত কমিটির এক বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানান, পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ আরমজ ইন অ্যাসোসিয়েশন ইউথ বিআরটিসি, বুয়েট’র সঙ্গে চুক্তি ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত বাড়াতে ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৩০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে পদ্মা সেতু ও এর দুই প্রান্তে রেললাইন নির্মাণকাজ শুরু হয়। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন বসানোর পাশাপাশি স্টেশন ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে আলাদা প্রকল্প নেয় রেলওয়ে। জিটুজি (সরকারি পর্যায়ে) পদ্ধতিতে বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। আগামী ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালে। পরে বাস্তবায়ন মেয়াদের সঙ্গে ব্যয় বেড়েছে।

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকিতে পড়ছে : জাতিসংঘ মহাসচিব

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ সাংবাদিকের কণ্ঠরোধে দেশে দেশে আইন হচ্ছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এর ফলে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা আরও বেশি হুমকিতে পড়ছে। আজ বুধবার (৩ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হলো গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের ভিত্তি। স্বাধীন সংবাদমাধ্যম বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উপস্থাপন করে আমাদের মতামত গঠনে এবং ক্ষমতায় থেকে সত্য বলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বিশ্বের প্রতি প্রান্তে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা আজ আক্রান্ত।

তিনি বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা ইন্টারনেটে এবং প্রাত্যহিক জীবনে সরাসরি আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, আটক ও কারাবন্দী হওয়া যেন তাদের জীবনের নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠছে। বিশ্বে ২০২২ সালে অন্তত ৬৭ জন সংবাদমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। যা আগের বছরের তুলনায় অবিশ্বাস্যভাবে ৫০ শতাংশ বেশি। নারী সাংবাদিকদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অনলাইনে সহিংসতার শিকার হয়েছেন এবং এক-চতুর্থাংশকে সরাসরি হুমকি দেওয়া হয়েছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষায় এবং তাদের ওপর হওয়া অন্যায়ের দায়মুক্তির প্রবণতার ইতি টানতে ১০ বছর আগে জাতিসংঘ প্ল্যান অব অ্যাকশন অন দ্য সেফটি অব জার্নালিস্ট বা সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে।

তিনি বলেন, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সারা বিশ্বকে আজ একসুরে কথা বলতে হবে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিকদের হুমকি-আক্রমণ, আটক ও কারাবন্দী করা বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি মিথ্যা ও গুজব রুখে দিতে হবে। সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো সাংবাদিকের পাশে সারা বিশ্ব দাঁড়িয়ে আছে।

বুলিং ও র‌্যাগিংয়ে জড়ালে শাস্তির নীতিমালা জারি

 শিক্ষা ডেস্কঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী বুলিং ও র‌্যাগিংয়ে জড়ালে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা জারি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এই নীতিমালা ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধ-সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’ নামে অভিহিত হবে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিন থেকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধ কমিটি করতে হবে। কোনো শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী এমনকি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে র‌্যাগিং বা বুলিংয়ে জড়িত হলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ফৌজদারি আইনে র‌্যাগিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং এবং র‌্যাগিং উৎসাহিত হয় এরূপ কোনো কার্যকলাপ/সমাবেশ/অনুষ্ঠান করা যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেসব জায়গায় বুলিং ও র‌্যাগিং হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেসব জায়গায় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারির ব্যবস্থা করবে।

এ ছাড়া সবাইকে সচেতন করতে শিক্ষাবর্ষের শুরুতে একদিন ‘বুলিং ও র‌্যাগিং প্রতিরোধ দিবস’ পালন করাসহ বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়।

জানা গেছে, দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা কার্যকর হবে। ইতোমধ্যে এই নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সব প্রতিষ্ঠান প্রধানকে পাঠানো হয়েছে।

অবৈধ বালু ব্যবসার জেরে একজনের হাত কর্তন, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলে অবৈধ বালু ব্যবসার প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসী হামলায় ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (২রা মে) ভুনবীর চৌমহুনীতে এজাহারভুক্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার এর দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন যুবকের উপর বর্বরোচিত হামলায় ডান হাতের কনুই কেটে ফেলায় গুরুত্বর গুরুত্বর অবস্থায় তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় চিহ্নিত বালু ব্যবসায়ী জলিল মাহমুদকে প্রধান আসামী করে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৭-৮ জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং জিআর ১৩৩/২৩।

গত শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের স্থানীয় চৌমহুনাস্থ আলকাছ স্টোরের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে এ ঘটনা ঘটে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন আসামীগণ পুর্বপরিকল্পিত ভাবে দা’ লাঠি , চাপাতি, রড ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ৫টি মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে এসে হামলা চালায়। এসময় প্রধান আসামী জলিল মাহমুদের নির্দেশে আসামীরা আলিশারকুল গ্রামের মৃত ওয়াহাব উল্ল্যার ছেলে আলকাস মিয়া ও তার ছেলে বুলবুল আহমেদকে দোকান হতে টেনে রাস্তায় নিয়ে হত্যার উদ্যেশ্যে চা পাতি দিয়ে কয়েক দফা আঘাত করে। এতে আলকাস মিয়ার ডান হাত ও পেটের ডান পাশে মারাত্বক কাটা জখম হয়। এসময় আলকাস মিয়ার ডান হাতের কব্জির হাড় কেটে ঝুলে পড়ে। সাহেদ মিয়া নামে এক ব্যক্তি বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাকেও দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে আহত সাহেদ মিয়ার বা হতে ১৭টি সেলাই দেয়া হয়।

এছাড়া কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুত্বর আহত আলকাস মিয়া ও তার ছেলে বুলবুল আহমদকে দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করে। অবস্থার অবনতি দেখে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল থেকে তাদের সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।

সেখানে আলকাস মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতাল পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আসামীদের সাথে পূর্ব বিবাদের জের এবং অবৈধ বালু ব্যবসার প্রতিবাদ করায় এই হামলার ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লখ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আহত আলকাছ মিয়ার অপর ছেলে ফেরদৌস আহমেদ বাদী হয়ে আলিশারকুল গ্রামের মৃত আমজদ উল্ল্যার ছেলে জলিল মাহমুদ (৫০) কে প্রধান আসামী করে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে রোববার শ্রীমঙ্গল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

অপর আসামীরা হলেন, জলিল মাহমুদের ভাই জালাল মিয়া (৫২), একই গ্রামের মৃত জয়নাল মিয়ার পুত্র জাহিদুল ইসলাম ওরফে রনী (২৫) ও জাহাঙ্গির মিয়া (৩২), মৃত ছোবহান মিয়ার পুত্র রিপন মিয়া (৩৫) ও আলআমিন (৩০), মৃত ফিরোজ মিয়ার পুত্র আহাদ এবং মৃত রহমান মিয়ার পুত্র রাসেল মিয়া (৪০)। এনিয়ে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এছাড়া আইন-শৃংখলা পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে রেব সদস্যদের ওই এলাকায় টহল দিতে দেখা গেছে।

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানিয়েছেন, আসামীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার চিহ্নিত অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে এলাকার সরকার নিষিদ্ধ সিলিকন বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে আসছিল। গ্রামের কৃষি জমির মাটি কেটে গর্ত করে বালু উত্তোলন করে এলাকার পরিবেশ, সরকারি, রাস্তাঘাট ও গ্রামীন অবকাঠামো মারাত্বক ক্ষতিগ্রস্থ করছেন। পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করার দায়িত্ব নিয়ে রেখেছে এই অবৈধ বালু খেকোরা।

এনিয়ে এলাকার লোকজনদের সাথে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় মানুষ প্রতিবাদ করে কুলিয়ে উঠতে পারতো না। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই অবৈধ বালু ব্যবসার প্রতিবাদ করার জের ধরে এই হামলার ঘটনা তবে এজাহার সূত্রে জানা গেছে বিগত দিনে ইউপি নির্বাচনের জেরে এই নির্মম হামলার শিকার হয়েছে ভোক্তভোগীরা।