সদরুল কাদির শাওন, সাতক্ষীরাঃ মানুষের সবচেয়ে জরুরি খাদ্য উপাদান হল পানি। পানির অপর নাম জীবন। আর সেই পানি যদি বিশুদ্ধ না হয় তাহলে সেই পানি মানব দেহের জন্য কতটা স্বাস্থ্যকর সেটা হয়তো অনেকেরই জানা নেই।

সাতক্ষীরায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে পানির প্লান্ট। যার অধিকাংশ‌ই বিএসটিআই এর অনুমোদন বহির্ভূত। গতকাল ৭ জুন বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকার উপর প্রতিবেদন করার একপর্যায়ে নজরে আসে কপোতাক্ষ নামের একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট।
বিস্তারিত জানতে চাইলে প্লান্টের মালিক কিছু জানাতে পারেননি। শুধু তাই নয়, তার প্লান্টের কর্মচারীরা হ্যান্ড গ্লাভস্ ও মাক্সবিহীন কাজ করছে। তিনি জানেন না, TDS কি? তার প্লান্টের ভিতর ময়লা আবর্জনায় ভর্তি। যেখান পানি ভরছে সেখানে ধুলায় ভরা। জার নীল (ফুডগ্রেড নয়) রঙের। নেই পরিবেশ ও ভোক্তা অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। এমতাবস্থায় তাদের উৎপাদিত পানি কতটা নিরাপদ?
সাতক্ষীরায় ৭৫ এর বেশী পানির প্লান্ট রয়েছে। তাদের মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটির বিএসটিআই অনুমোদন রয়েছে। বাকীদের আবেদন জমা দেয়া আছে। কিন্তু কপোতাক্ষ প্লান্টের বৈধ কোন কাগজ নেই।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পানি ব্যবসায়ী মিলিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তোফিকুজ্জামান লিটু বলেন, সাতক্ষীরা জেলার বিশুদ্ধ সংকটকে সামনে রেখে আমরা যারা মাঝারি পানির প্লান্ট মান নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকে পানি সরবরাহ করে আসছি। আমরা মানব সেবায় নিয়োজিত আছি। ছোট জেলা হিসেবে নোনা ও আয়রন জনিত পানির কারণে মানুষ অসুস্থ হচ্ছে। বিএসটিআই এর আওতা ভুক্ত করার লক্ষ্যে আইনকানুন শীথিল করে শর্তসাপেক্ষে প্রশাসনিকভাবে আমাদের সহযোগিতা করে একটা ভালো পরিবেশে যাওয়ার চেষ্টা করছি ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের সমিতি সাথে আলোচনা ছাড়াই যত্রতত্র ভাবে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মান নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই কিছু অসাধু ব্যক্তি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের নামে জনগণকে ভয়ংকর বিপদের মুখে ধাবিত করছে বিষয়টি দূঃখজনক। আমি এই ধরনের কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
সাতক্ষীরা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলম মহোদয় কে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি অবৈধভাবে ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য উৎপাদনের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে প্রতিবেদক কে জানান।
এছাড়া,  বিশ্ব নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রবিধানমালা চূড়ান্তকরণ ও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে অ্যাডভোকেসি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)।
গেল রোববার (৬ জুন) সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, ‘নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও গ্রহণ স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদে জনগণ, অর্থনীতি তথা গোটা পৃথিবীর জন্য সুফল বয়ে আনে।’

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *