কমলগঞ্জে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে মর্মান্তিক খুন

কমলগঞ্জে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে মর্মান্তিক খুন

তিমির বনিক, মৌলভীবাজারঃ গাছের আম পাড়া নিয়ে সৃষ্ট বিরোধে দুই ছেলেকে সাথে নিয়ে ভাতিজা চা-শ্রমিক সুমন গোয়ালকে (৩২) কুপিয়ে খুন করেছেন চাচা। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে উপজেলার ইসলামপুর ইউপির চাম্পারায় চা-বাগানের ২৫ নম্বর সেকশনে এ ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় ঐদিন রাতেই নিহতের ভাই সঞ্জু গোয়ালা বাদি হয়ে চাচা মনোহর গোয়ালাকে প্রধান আসামি করে চাচাত দুই ভাই বিশ্বজিত গোয়ালা ও সঞ্জিত গোয়ালার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের ৫ ঘণ্টার মধ্যেই গোপন সংবাদ পেয়ে বুধবার ভোর ৫টায় হবিগঞ্জের নোয়াপাড়া চা-বাগানে হত্যাকারীদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই চাচাতো ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।  তবে এ মামলার প্রধান আসামি চাচা মনোহর গোয়ালা পলাতক রয়েছে।  পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার একটি গাছের আম পাড়া নিয়ে চাম্পারায় চা-বাগানের সুমন গোয়ালার সাথে তার চাচা মনোহর গোয়ালা ও তার দুই ছেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় সুমন গোয়ালা চা-বাগান অফিসে গিয়ে ব্যবস্থাপকের কাছে বিচারপ্রার্থী হন।

এতে সম্মানহানি হয়েছে মনে করে ক্ষিপ্ত হয়ে মনোহর গোয়ালা তার দুই ছেলে বিশ্বজিত গোয়ালা ও সঞ্চিত গোয়ালা মিলে সুমন গোয়ালাকে একা পেয়ে ধরে ২৫ নম্বর সেকশনে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দুই ছেলেসহ আরও দুইজনকে নিয়ে দা দিয়ে উপর্যুপরি কুপালে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।  চা-বাগান সেকশনে ফেলে রাখলে এলাকাবাসী লাশটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল তৈরি করে থানায় নিয়ে আসে। ময়না তদন্তের জন্য গতকাল বুধবার সকালে মরদেহ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এদিকে গত মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে হবিগঞ্জের নোয়াপাড়া এলাকার তেলিয়াপাড়া চা-বাগানে কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা, এএস আই হামিদুর রহমান ও আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ হত্যকারীদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে অভিযান চালালে আসামিরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া করে নিহতের দুই চাচাত ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জানায়, এ হত্যাকাণ্ডে তাদের সাথে একই এলাকার মিলন ও সুজন জড়িত ছিল। এ সময় তারা দা ও কুড়াল ব্যবহার করেছে। সুমন চা-বাগান থেকে বাঁশ নিয়ে ফেরার পথে তার গতিরোধ করে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এ দুই পরিবারের মাঝে দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ চলছিল। দুই আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মৌলভীবাজার বিজ্ঞ কোর্টে প্রেরণ করা হবে। প্রধান আসামি চাচা মনোহরসহ অপর দুইজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *