লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ করোনা মহামারি চলছে। চলছে কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় সপ্তাহ। সারাদেশের মত বন্ধ আছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পশুর হাটগুলো। এগিয়ে আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে সামনে রেখে ও প্রাকৃতিক ঘাসের সুবিধা থাকায় অনেকেই গরু পালন করেন চট্টগ্রামের সর্ব দক্ষিণের এই উপজেলায়। ফলে এখানে ছোট, বড়, মাঝারি আকারে অনেক গরুর খামারও গড়ে উঠেছে। খামারিরা আশায় থাকেন গরু বিক্রি করে স্বাবলম্বী হওয়ার। বিনিয়োগও করেছে প্রচুর অর্থ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় এবং লকডাউন শুরু হওয়ায় এখন গরু ও ছাগলের বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় তারা। লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে পশুর দাম কমতে শুরু করেছে। গরু কেনা নিয়ে ক্রেতাদের মাঝেও তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। যদি কোরবানিতে পশুর হাট না বসে তাহলে ন্যায্য দাম তারা পাবেন না। এতে আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিতে পড়তে হবে। এ কারণে খামারিদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর জানিয়েছে,উপজেলাজুড়ে মোটাতাজাকরণ খামারের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজারের বেশি।  খামারগুলোতে গরু রয়েছে ১৫ হাজারেরও বেশি।  খামার ছাড়াও গ্রামে পুরো বছরজুড়ে গরু পালন করা হয়। পরে ঈদে বিক্রি করার মাধ্যমে লাভবান হওয়ার আশা করেন এসব গরু পালনকারীরা। কিন্তু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে ক্রেতাদের মাঝে গরু কেনা নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া বাজার বসা নিয়েও সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে বাজার বসা নিয়ে জেলা প্রশাসনের অপেক্ষায় রয়েছে উপজেলার প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

আল বয়ান এগ্রো ফার্মের মালিক মোঃআক্তার কামাল জানান, প্রতিবছর আমরা স্থানীয়ভাবে কোরবানির পশুর হাটে গরু নিয়ে যাই এবং সেখানে দরদাম যাচাই-বাছাই করি। তার পর বাজার বুঝে বিক্রয় করি। এ বছর ওই হাট যদি না বসে তাহলে আমরা কোথায় বিক্রয় করবো?

আম্বিয়া কবির এগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন বলেন, আমার খামারে সিন্ধি, শাহিওয়াল, বার্মা ও দেশি জাতের ২১ টি গরু ছিল। আমি গরুর ছবি ও ভিডিওসহ অনলাইনে বিক্রির চাহিদা দিয়েছি। সেখানে কয়েকটা বিক্রি হয়েছে। আমি সরকারের কাছে দাবি জানায় যাতে সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানের আগে গরুর বাজার খুলে দেয়। তা না হলে আমদের মূলধন হারিয়ে পথে বসা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না।

চরম্বার রমজান আলী বলেন, আমার দুটি দেশি জাতের গরু আছে। বাড়িতে এসে স্থানীয় কয়েকজন দাম দর করে গেছেন। কিন্তু তারা যে দাম করেছেন বাজার মূল্যের অর্ধেক।

লোহাগাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.খালেকুজ্জামান বলেন, খামারিরা গরু পালন করেন লাভের আশায়। পবিত্র ঈদুল আজহার বেশি বাকি নেই। চেষ্টা করা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরু বাজার চালু করার। কিন্তু পরিস্থিতিই বলে দিবে কি করার আছে। তবে আমরা আজ থেকে প্রায় ১০ দিন আগে খামারিদের গরুর ছবি, নাম ঠিকানা, মোবাইল নম্বর দিয়ে সিংড়া অনলাইন কোরবানির পশুর হাট নামে ফেসবুক পেজে গরু বেচা-কেনার ব্যবস্থা করেছি। ইচ্ছে করলে যেকোনো ক্রেতা-বিক্রেতা এখানে চাহিদা মতো কেন-বেচা করতে পারবেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *