হুশিয়ারী

“টক শো”

বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে এখন টক শো নিয়মিত প্রচারনা। প্রতিদিনই সব চ্যানেলে একই ব্যক্তিকে এনে টক শো প্রচার করে। এর বেশীর ভাগই রাজনীতি বিষয়ক। একটা পদ্ধতিও অনুসরন করে তারা। বিপরীত দুটি পক্ষকে আমন্ত্রণ জানায়।  সঞ্চালক নিজেই বিতর্কটি তুলে দেন। এই বিতর্কে শিষ্ঠাচারও রক্ষা হয়না অনেকে ক্ষেত্রে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের চিৎকার ছাড়া আর কিছু শোনা যায়না। বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন সঞ্চালক সময় স্বল্পতার কথা বলে সমাপ্তি টানেন বিতর্কের নামে ঝগড়াটির।

দর্শক বিনোদনের জন্য টেলিভিশনের সামনে বসে রক্তচাপে ভোগে। বাধ্য হয়েই বুদ্ধিমান দর্শক সুইজটি অফ করে বসে থাকেন তিরিক্ষি মেজাজে। আর যদি কোন বিশেষ বিষয় পাওয়া যায়, তাহলে সরকারের ব্যর্থতা খুজতে আমন্ত্রণ জানান চিহ্নিত ব্যক্তিদের। তারা দেশ গেল বলে জ্ঞান বিলান জাতিকে। সরকার কোথায় কিভাবে ভুল করেছে খুটিয়ে খুটিয়ে বলে দেন আর পদত্যগ দাবী করেন সরকারের । অর্থাৎ মূল অনুষ্ঠান তর্কযুদ্ধ টক শো। বিনোদনের জন্য যে সব অনুষ্ঠান প্রচার হয় তা বিজ্ঞাপনের জন্য দেখার উপায় নেই। আগে অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে বিজ্ঞাপন প্রচার হত এখন বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ফাঁকে অনুষ্ঠান প্রচার হয়।

বিজ্ঞাপনের যন্ত্রনায় অধৈর্য্য হয়ে দর্শক চ্যনেল বদল করে অন্য চ্যনেলে চলে যায়। কোন অনুষ্ঠানই দেখা হয়না পূর্ণভাবে। কেউ যদি পূর্ণ অনুষ্ঠান দেখতে চায় তাহলে পুরু দিনটিই ব্যয় করতে হয়। কারন টক শো ছাড়াও খবরের বিড়ম্বনা কম না। খবরের শিরোনামটি বলেই শুরু হয় বিজ্ঞাপন। এক পেয়ালা চা শেষ করে ফিরে এসে প্রতিনিধির তথ্যচিত্র প্রচার করতে গিয়ে টেলিফোনে যোগাযোগের বিড়ম্বনা হয় প্রতিনিধির সাথে। যোগাযোগের পর একই শব্দ বার বার বলে ” এই ছিল এখন পর্যন্ত সংবাদ”। 

টেলিভিশনে বিভিন্ন বিষয়ে মতামতের অনুষ্ঠান বিশ্বের সব দেশেই প্রচার হয়। বিজ্ঞাপনও প্রচার হয়। কিন্তু বাংলাদেশের মত এমন বিরক্তিকর আলোচনা হয় না। টেলিভিশনে টক শো কি জরুরী? টক শো’তে কথা বলার নিয়ম নীতি থাকা জরুরী। এবং বিশেষ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞদেরই কথা বলা উচিৎ। বিনোদনের নামে টক শো এখন বিরক্তিকর। টেলিভিশনে রাজনৈতিক বিতর্ক দেশের রাজনীতিকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। অনেকে টেলিভিশনে কথা বলেই জীবিকা নির্বাহ করছে এখন। আলোচনার বিষয় নির্বাচন হওয়া উচিৎ গুরত্ব বিবেচনা করে। টক শো’র কারনে অনেক দর্শক এখন টেলিভশনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে আগ্রহ বেড়েছে যৌক্তিকভাবে। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে, শিঘ্রই বিকল্প ভাবানা অবাস্তব নয়। বাংলাদেশের টেলিভিশনগুলি সরকারের বিরুদ্ধে মূখ্য ভুমিকা পালন করছে বললেও ভুল হবেনা। কারন সংবাদ অসত্য হলে তা দেশকে ক্ষতিগ্রস্থ্য করে নানাভাবে।

আজিজুর রহমান প্রিন্স, টরন্টো, কানাডা

 

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *