তিমির বনিক, মৌলভীবাজার সংবাদদাতাঃ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থেকে পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা দম্পতির অন্তরঙ্গ দৃশ্য ধারণ করে ব্লাকমেইল করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবী করে আসছিল ওই রিসোর্টের দুই কর্মচারী।

তারা সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার চড়িপারা এলাকার আবুল কালামের ছেলে রেজোয়ান (২৩) ও শহরের বিরাইমপুর এলাকার মৃত শফিক মিয়ার ছেলে খালেদ মিয়া (২৭) বলে জানা যায়।

মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গলে তামিম রিসোর্টের দুই সাবেক কর্মচারীকে গোপনে ছবি ভিডিও ধারণ করে তা প্রকাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবী প্রদানের বিরুদ্ধে  শ্রীমঙ্গল থানায় গত ১০,০২,২১ইং তারিখে ৮(১)/৮(২) ২০১২ইং ধারায় মামলা নং-১৪, এর  প্রেক্ষিতে শ্রীমঙ্গল পুলিশের একটি টিম সিলেটের কানাইঘাট ও শ্রীমঙ্গলে অভিযান চালিয়ে রিসোর্টে গোপনে ছবি ও ভিডিও ধারণের মুল হোতা ম্যানেজার রেজওয়ান ও তার সহযোগী খালেদকে ছবি-ভিডিও’র  মোবাইলসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে এবং আটকের পর স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলেও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।

ঘটনার বিবরণ ও মামলার সুত্রে জানা যায়,জেলার কুলাউড়া উপজেলার জনৈক রিয়াজউদ্দিন বিবাহের কিছুদিন পর স্ত্রীকে নিয়ে হানিমুনের ইচ্ছা করলে পূর্ব পরিচিত একজনের তথ্য  অনুযায়ী তামিম রিসোর্ট ইসবপুর গত ২৯,০৭,২০২০ইং তারিখে নিজ স্ত্রীকে নিয়ে তামিম রিসোর্টে অবস্থান করেন এবং পারিবারিক প্রয়োজনে একই দিনে সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে ফিরে যান।
পরবর্তীতে গত ১৪,১০,২০২০ইং তারিখ সকালে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফেইক ইমুর মাধ্যমে কল করে তার কাছে টাকা দাবি করে ও হুমকি প্রদান করে এবং বলে -তাদের কাছে তার (বাদী ও তার স্ত্রীর ) নোংরা ছবি এবং ভিডিও হয়েছে। পরবর্তীতে  নাদীরা রুমী নামক আইডির মেসেঞ্জারে বাদীর নিকট তার নিজের ও তার স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি প্রেরণ করেন। চাঁদাবাজদের হুমকি ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে এবং তাদের কথায় চলতে হবে,তা না করলে গোপনে ধারণ করা স্বামী-স্ত্রীর ছবি প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
চাঁদাবাজরা বাদীর এবং বাদীর বন্ধুদের আইডির বিভিন্ন কমেন্টে গোপন ছবি গুলো পোস্ট করতে থাকলে চাঁদা দিতে বাধ্য হলে ০১৮৬৩ ৪৮১২২২ থেকে ইমুতে কল করে  ১৯,০১,২০২১ইং তারিখে  ০১৭৯৯৭৩৮৩৮০ বিকাশ নাম্বার প্রদান করিয়া উক্ত নাম্বারে টাকা পাঠানোর জন্য হুমকি দিতে থাকে নাদিরা আক্তার রুমি নামের ফেইসবুক আইডি, নাদিরা আক্তার রুমি নামের ইমু,হারুন মিয়া (৩৩),জীবন মিয়া (৩২) রিংকু দাস (২৫),শাহিন মিয়া (২৭) সর্ব সাং তামিম রিসোর্ট শ্রীমঙ্গলকে উল্লেখ করে শ্রীমঙ্গল থানায় মামলা দায়ের করে।
অভিযোগের ভিত্তিতে শ্রীমঙ্গল থানার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এসআই আল আমিন এর নেতৃত্বে আসাদুর রহমান,এসআই তীথঙ্করসহ পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে ফেইক আইডির এডমিন মামলার প্রধান আসামি তৎকালীন তামিম রিসোর্টের ম্যানেজার রেজওয়ান পিতা আবুল কালাম, সাং চরুইপাড়,কানাইঘাটকে গ্রেপ্তার করে এবং তার দেওয়া তথ্যমতে সহযোগী খালেদ (২৭) পিতাঃ মৃত শফিক মিয়া বিরাহিমপুর শ্রীমঙ্গলকে তার নানা বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের গ্রেপ্তারে তামিম রিসোর্টের মালিক পক্ষ যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন বলে জানান মামলার তদন্তকারী এস আই আল আমীন।
উল্লেখ্য, খালেদ তার নানার বাড়িতে বসবাস করে তবে তার জন্মস্থান কুলাউড়া এলাকায়। গ্রেপ্তারকৃতদের থেকে উদ্ধারকৃত মোবাইল সিআইডিতে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *