আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তিব্বত নদীর ওপর বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঁধ দিতে যাচ্ছে চীন! বিশ্বের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করতেই এই মহা পরিকল্পনা করছে হিমালয়ের পাদদেশে তিব্বত নদীর ওপর। এখানেই এক সময় প্রাচীন ইয়ারলুং সভ্যতাকে ঘিরে গড়ে উঠেছিল তিব্বত সামাজ্র্য।
২০২০ সালের নভেম্বর মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছিল, তিব্বতের স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চলের ইয়ারলুং সাংপো নদীতে ৬০ গিগাওয়াট মেগা-বাঁধ দেবে বেইজিং।
এখন ২০৬০ সাল নাগাদ কার্বন নিউট্রালিটি অর্জনের চেষ্টায় তিব্বতে নিজেদের জলবিদ্যুৎ প্রজেক্টের কাজ দ্বিগুণ গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে চীন। তবে এই বাঁধকে কেন্দ্র করে তিব্বতের অধিকার গ্রুপ এবং পরিবেশবাদীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে বেইজিং।
তেনজিন দোলমে কখনও তিব্বত যাননি। তবে তিব্বতীয় বংশোদ্ভূত এই নারী এখন নদী ও পর্বত নিয়ে তার গল্পে চীনের এই বাঁধের বিষয়টি তুলে আনছেন। ভারতে নির্বাসনে থাকা অবস্থায় জন্ম নেয়া এই নারী এখন অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মেলবোর্নে তিব্বত ভাষা এবং সংস্কৃতি শেখান।
তিনি বলেন, প্রকৃতির জন্য সম্মানের শেকড় অনেক গভীর। দোলমে বলেন, যখন আমরা নদীতে সাতার কাটতাম, তখন আমাদের বলা হতো আমরা যেন কখনও নদীকে বাথরুম হিসেবে ব্যবহার না করি। কারণ পানিতে নদীর দেব-দেবী রয়েছে। এছাড়া তিব্বতীয়দের কাছে ইয়ারলুং সাংপো নদীর বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। কেননা তিব্বতের সংস্কৃতিতে এটা দেবী দোরজে ফাংমো’র শরীর।
তিব্বতান পলিসি ইন্সটিটিউটের পরিবেশ এবং উন্নয়নের প্রধান টেম্পা গায়েল্টসেন জামলহা বলেছেন, প্রকৃতির প্রতি এই শ্রদ্ধা তিব্বত মালভূমির অনন্য প্রাকৃতিক দৃশ্য থেকেই জন্ম হয়েছিল এবং এর শেকড় বহু শতাব্দী পুরনো।
উল্লেখ্য, ইয়ারলুং সাংপো (ব্রহ্মপুত্রের চীনা নাম) নদে চীন যে বাঁধ তৈরি করেছে তাতে ভাটির দেশ ভারত ও বাংলাদেশে হঠাৎ বন্যা ও নদীভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাপক হারে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সুত্রঃ আল-জাজিরা।
Leave a Reply