আজিজুর রহমান প্রিন্স, ঢাকা, বাংলাদেশঃ বাজেট হল অর্থ বছরে সরকারের আয় ব্যয়ের হিসাব দেখানো। কোন খাতে কত খরচ ধরা হবে, কোন কোন খাতে কত রাজস্ব উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারন করা হবে তার একটি আনুমানিক প্রস্তাবনা। প্রতিটি বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী যে হিসাবটি দেখান তার কতটা কার্যকর হয় জানিনা। যদিও হিসাব দেখার জন্য একটি সংসদীয় কমিটি রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সংসদে রিপোর্ট দাখিল করারর কথা। ঐ রিপোর্টেই উল্লেখ থাকাবে প্রস্তাবিত বাজেট কতটা কার্যকর হয়েছে। বিগত বছরের হিসাব দেখেই নতুন বছরের বাজেট প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী। জিডিপিও নির্নয় করা হবে রিপোর্ট দেখেই। দুর্ভাগ্য হলেও সত্য কোন সরকারের আমলেই এই রিপোর্ট দেখার সুযোগ হয়নি কারও। জি ডি পি নির্নয়ের স্কেলটিও পরিস্কার নয়।

বাংলাদেশে বাজেটের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াটি হল এক দল বলবে চমৎকার বাজেট। অন্য দল বলবে মানুষ মারার বাজেট। এবার সেই প্রতিক্রিয়াটিও দেখা যায়নি। বিশাল অঙ্কের বাজেটের খুটিনাটি বুঝবার যোগ্যতা অনেকেরই নেই (আমারত নয়ই)। কিন্তু যারা সমালোচনা করেন শুনে মনে হবে একেক জন বিজ্ঞ অর্থনীতিবীদ। এই কারনেই কর্মটি বিরোধী দলের। অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা বাজেটের উপর পর্যালোচনা করবেন। ধরিয়ে দিবেন কোথায় কোন খাতে গুরত্ব দিলে দেশের উন্নয়ন হবে। এটাই রাজনীতির শিষ্ঠাচার। বিরোধী দলের সমালোচনায় মানুষ জানতে পারবে কোথায় কি ভুল হচ্ছে। কিন্তু এবার বাজেট নিয়ে জাতীয় পার্টি কিংবা বি এন পি’র কোন প্রতিক্রিয়া চোখে পরেনি। বাজেটের উপর বক্তৃতায় জাতীয় সংসদে যারা বক্তব্য দিবেন তাদের ভাষারও কোন পরিবর্তন হবে আশা করিনা। দেশের উৎপাদন এবং রাজস্ব খাতের বিশদ আলোচনা করার যোগ্যতাও খুব বেশী সাংসদের নেই। সঠিক খাতটি চিহ্নিত করন এবং সেই খাতে ভর্তুকি হলেও বরাদ্ধ নিশ্চিত করন জরুরী।

বিগত তিন মেয়াদে বি এন পি পিছিয়ে থেকেছে। সভা সমিতিতে বক্তৃতা করে শুধু সরকারের সমালোচনাই করেছে। বাস্তবধর্মী কোন আন্দোলনও গড়ে তুলতে পারেনি। দেশে উন্নয়ন হয়েছে আশাতীতভাবে। বিদ্যুৎ আর কৃষি খাতে কৃতত্ব দেখিয়েছে সরকার। এখন নদী খনন আর মিঠা পানি সংরক্ষন নিশ্চিত করা গেলে রাজস্ব উৎপাদনের নতুন খাত সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পদ্মা সেতু যেমন দেশের অবস্থান বদলে দিয়েছে। নদী সংস্করন করা গেলে অর্থনৈতিক উন্নতিও সংযোগ হবে। মৎস শিল্পে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর দ্বিতীয় রপ্তানীকারক দেশ। নদী এবং মিঠা পানি সংরক্ষন করা গেলে মৎস শিল্পেও ব্যপক সারা জাগাবে বাংলাদেশে। কৃষি খাতে সরকারের গুরত্ব দেওয়ায় বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ন। নদী খননের ব্যয় বেশী। নদীও একটি দুটি নয়। পলি মাটির কারনে নদী ভরাট হয়ে যায়। তাই খনন প্রক্রিয়া অব্যহত রাখতে হবে।

সঙ্গত কারনেই বাজেটে অর্থ বরাদ্ধ থাকা আবশ্যক। দ্বিতীয় বৃহত্তম খাতটি হল শিক্ষা। ৫০ বছরেও শিক্ষা খাতে বরাদ্ধ খুব একটা বাড়েনি। শিক্ষিত জনবল রপ্তানীতেও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থান বদলে দিতে পারে। কারগরি শিক্ষায় গুরত্ব দিয়ে স্বল্প শিক্ষিত জনগোষ্ঠিকে প্রস্তুত করা গেলে দেশ পাল্টে যাবে। এই খাতে ভর্তুকি দিলেও সুফল আনবে এক মেয়াদেই। ডিজিটাল প্রকল্পের অধীনে আই টি সেক্টরকে দ্রুত কার্যকর করা গেলে বাংলাদেশ হবে দক্ষিনপুর্ব এশিয়ার অন্যতম জনশক্তির দেশ। বাজেট বক্তৃতা আর সুনিদৃষ্ট প্রস্তাবনা অভিন্ন নয়। নেতৃত্বের কাছে এমনটাই আশা করে জনগন। 

 

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *