মুরাদনগরে আগুন কেড়ে নিল তিন রিকসা চালকের স্বপ্ন

মোঃ খোরশেদ আলম, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধিঃ হানিফ মিয়া খেটে খাওয়া মানুষ,অভাবের সংসার। দিন আনে দিন খায়। এমন অবস্থায় মরার ওপর খাড়ার গাঁ। আগুনে পুড়ে গেছে রঙ্গিন স্বপ্নের অটো রিকসাটি। যাকে নিয়ে হানিফ স্বপ্ন দেখছিল অনেক কিছু।
পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে একমাত্র তার অবলম্বন ছিল অটোরিকসাটি। স্বপ্নে দেখেছিল তা দিয়ে অভাব কিছুটা লাগব করা যাবে। যার কথা বলছি তিনি হলেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর (লোহাগাড়া) গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে হানিফ মিয়া।
গত শনিবার রাত আনুমানিক ৩টায় হানিফ মিয়ার গ্যারেজে আগুনের সুত্রপাত হয়ে বসতঘরটিও পুড়ে ছাই হয়। সাথে পুড়েছে, টিভি, ফ্রিজ, আলমিরা, সুকেজ, হাঁস, মুরগিসহ ঘরের সকল আবাসপত্র এবং ঘরে থাকা ৩টি অটো রিকসা। এরমধ্যে হানিফ একটি অটো রিকসা চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করতো। আরেকটি চালাতো তার ছোট ভাই আরিফ মিয়া। অন্যটি পাশের বাড়ির মনিরুজ্জামানের ছেলে শামীম মিয়া চালাতো। ২০/২৫ দিন পূর্বে শামীম অটো রিকসাটি কিনেছিল। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, অটো রিকসাটি শামীম হারিয়ে এখন নিঃস্ব। বাবারও তেমন অর্থকড়ি নেই। করোনার পরিস্থিতিতে এমনিতেই আয়-রোজগার বন্ধ। এর মাঝে আবার দুর্ঘটনা। সব মিলে শামীম এখন বড়ই অসহায়। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সামনের দিনগুলো কিভাবে কাটাবে সেই চিন্তায় হানিফ দু’চোখের সামনে অন্ধকার দেখছেন বলে সাংবাদিকদের জানায়।
সর্বশান্ত আরিফ মিয়া বলেন, আগুনে তার স্বপ্ন ও সম্বল সবই শেষ। এমনকি তার পরিবারবর্গ নিয়ে দু-মুঠো চাল রান্না করে ভাত খাবে সেই ব্যবস্থা টুকুও নেই। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে তার দিনমুজুরি কাজ করা ছাড়া কোন উপায় নেই। এমন অবস্থায় কোন হৃদয়বান ব্যাক্তি সাহায্যার্থে এগিয়ে আসলে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি পরিবার উপকৃত হবে।
পাহাড়পুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী আব্দুস ছামাদ মাঝি বলেন, অটো রিকসা চার্জার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে শুনেছি। তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবার গুলোকে শান্তনা দেই। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসও এসেছিল। এলাকাবাসী প্রায় দেড় ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। আগুনে প্রায় ৭/৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত ভাবে জানালে ওই পরিবার গুলোকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *