তিমির বনিক, মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের মতিগঞ্জের এলাকাধীন হাইল হাওরে অবস্থিত “রাজা ফিশারিজ এন্ড হ্যাচারী কমপ্লেক্সে”র সাবেক স্বত্বাধিকারী মৃত মাস্টার গোলাম মোস্তফা রাজা মিয়ার মৃতদেহ মৃত্যুর আড়াই বছর পর ময়না তদন্তের জন্য উত্তোলন করা হবে।

জানা গেছে, আগামী মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১ টায় আদালত কর্তৃক নির্ধারিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সানজিদা খানম এর উপস্থিতিতে স্থানীয় পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে পুলিশ স্কটের মাধ্যমে মৃত মাস্টার গোলাম মোস্তফা রাজা মিয়ার মৃতদেহ উত্তোলন করা হবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল থানার এসআই মোহাম্মদ আলমগীর জানান,রাজা ফিশারিজ এন্ড হ্যাচারী কমপ্লেক্সে’র সাবেক স্বত্বাধিকারী মৃত মাস্টার গোলাম মোস্তফা রাজা মিয়ার মৃতদেহ উত্তোলন করা হবে, তার মৃত্যু নিয়ে তারই ছেলে গোলাম মুরসালিন রাজার আবেদনের প্রেক্ষিতে মৌলভীবাজার জেলার বিজ্ঞ আদালত মৃতদেহ উত্তোলন করে পোস্টমের্টেম করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন,তার ছেলের আবেদনে মৌলভীবাজার আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে তার মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যা দাবী করে মামলা দায়ের করলে এ আদেশ দেওয়া হয়।

এস আই মোহাম্মদ আলমগির আরো বলেন,মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে তাকে তার সৎ মা নুরজাহান রানী রাজা বালিশ চাপা দিয়ে,বিষ প্রয়োগ করে কিংবা অন্য কোন উপায়ে হত্যা করে থাকতে পারে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ন্যায় বিচারের লক্ষ্যে আদালত তার মৃতদেহ উত্তোলন করে ময়না তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে স্থানীয় একটি সুত্রে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানা যায়, রাজা মিয়ার রেখে যাওয়া বিশাল সম্পত্তি নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে প্রথম পক্ষের সন্তানদের দীর্ঘদিন ধরে দেন দরবার চলছে। এরই প্রেক্ষিতে তার লাশ উত্তোলনের আবেদন করা হয়েছে,তবে তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন মাস্টার গোলাম মোস্তফা রাজা লন্ডন থেকে ফিরে শ্রীমঙ্গলের মতিগঞ্জে গড়ে তুলেছিলেন বিশাল মাছের খামার। প্রায় আড়াই বছর পুর্বে তিনি মৃত্যু বরণ করেছে,এভাবে তাকে তার সন্তানেরা মৃত্যুর পরে লাশ তুলে অপমান করবে এটা ভাবাও যায় না।

উল্লেখ্য, গত বছর ২৬/০৮/২০২০ তারিখে মৃত রাজা মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী নুরজাহান বেগমকে প্রধান আসামি ও তার ভাই দেওয়ান আলামিন রাজা, দেওয়ান সেলিম, দেওয়ান জান্নাতুল ফেরদৌস লিখন ও নাছির মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা আরো বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলে আদালত দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করে আরজি বা নালিশকে গত ০৭/০৯/২০২০ তারিখের মধ্যে এফআইআর হিসেবে গণ্য করতে শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয় এবং এরই প্রেক্ষিতে আদালত লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *