মো.আমিন আহমেেদ, সিলেট প্রতিনিধিঃ পৃথিবীর পরিবেশ আজ হুমকির মুখে অথচ এ সময়ে সিলেটের শাহপরাণ বিআইডিসি এলাকায় চলছে টিলা কাটার মহোৎসব।
সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় উচ্চ আদালতের রায় উপেক্ষা করে উদ্বেগজনকভাবে পাহাড়,টিলা ও বন কেটে উজাড় করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাহাড়,টিলা ও বন কাটার কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যাবস্থা মারাত্মক ঝুঁকির দিকে যাচ্ছে। এর ফলে ভূমি ধ্বংসসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থাপনা,বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকা রয়েছে। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে একটি প্রভাবশালী চক্র বেপরোয়া ভাবে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কেটে ধ্বংস করছে।
অভিযোগ উঠেছে ,সিলেট মহানগরের শাহপরাণ থানাধীন বিআইডিসি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র নানাভাবে সরকারি ভূমি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দখল ও বিক্রি করে আসছে । শাহপরাণ থানার খাদিমনগর মৌজার ১১৫৫ দাগসহ অন্যান্য দাগের ভূমি অবৈধভাবে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী চক্র।
স্থানীয়রা জানান,খাদিমপাড়া এলাকায় ভূমিখেকােদের বিরুদ্ধে অভিযােগ দীর্ঘদিনের। এখনও সেখানে সরকারি ভূমি দখল,পাহাড়-টিলা কাটার মহােৎসব চলছে। অসংখ্য স্থানে পাহাড় ও টিলা কাটা হচ্ছে বিরতিহীনভাবে । এসব টিলা ও পাহাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করছে পাহাড়খেকো চক্র। পাহাড় টিলা কেটে গড়ে উঠছে জনবসতি যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ,দীর্ঘদিন যাবৎ শাহপরান থানা এলাকায় পাহাড় কাটার মহোৎসব চালিয়ে গেলেও উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশের রহস্যজনক নীরব ভূমিকায় জনসাধারণ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
সংশ্নিষ্ট প্রশাসনকে হাত করে পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। পাহাড় কাটারোধে প্রশাসনকে অবগত করলেও কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে দিন দিন টিলা ও পাহাড় কাটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে একদিকে সবুজেঘেরা সিলেট যেমন হারাচ্ছে সৌন্দর্য অপরদিকে পাহাড়কাটার কারণে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে পাহাড় ও বনাঞ্চলের আয়তন।
পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের নিকট স্থানীয়দের আবেদন- পাহাড়,টিলা কেটে অবৈধ ভাবে দখল ও ক্রয়-বিক্রয় বন্ধে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সরকারি খাস জমি রক্ষায় অভিযান অব্যাহত রাখা হোক।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক এমরান হোসেন জানান, পাহাড় কাটা আইনগত ভাবে সম্পূর্ণ অবৈধ এবং পরিবেশ বিধ্বংসী একটি কাজ। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা সর্বদা সচেষ্ট।এসবের বিরুদ্ধে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসছি এবং অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাসহ মামলা করেছি।
এ বিষয়ে তথ্য প্রদানের মাধ্যমে জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন,কেউ যদি অবৈধভাবে পাহাড় কাটে তাহলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬ (খ) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করতে পারবে না। তবে অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজনে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে পাহাড় বা টিলা কাটা যেতে পারে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তাই স্থানীয়, সচেতন মহল সরকারি টিলা কাটা ও টিলা খেকোদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
Leave a Reply