সাংবাদিক শাহীন রেজা নূর চলে গেছেন না ফেরার দেশে

সাংবাদিক শাহীন রেজা নূর চলে গেছেন না ফেরার দেশে

প্রখ্যাত সাংবাদিক ও প্রজন্ম ’৭১-এর সাবেক সভাপতি শাহীন রেজা নূর চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তিনি অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে ভুগছিলেন। আজ শনিবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে কানাডার ভ্যাংকুভারে একটি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।

তার ভাই সাংবাদিক জাহিদ রেজা নূর জানান, শাহীন রেজা নূরের শেষ ইচ্ছা ছিল, তিনি দেশের মাটিতে শায়িত হবেন। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও কানাডার দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত,  সাংবাদিক শাহীন রেজা নূরের জন্ম ১৯৫৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর, মাগুরা জেলার শালিখা থানার শরশুনা গ্রামে। তার পিতা শহীদ সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন এদেশের সাংবাদিকতা জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সাবেক বার্তা ও কার্যনির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীর সদস্য ও তাদের এ দেশীয় দোসর আলবদর ও আল শাম্সদের সহযোগিতায় যে বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞ শুরু হয়, তার নির্মম শিকার হন সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন।

শাহীন রেজা নূরের মা বেগম নূরজাহান সিরাজী ছিলেন একজন গৃহিনী। পিতা-মাতার ৮ সন্তানের মধ্যে শাহীন রেজা নূর ছিলেন দ্বিতীয়। পিতা শহীদ হওয়ার পর শাহীন রেজা নূর ১৯৭২ সালে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে বার্তা বিভাগে অনুলিপিকারের চাকরী গ্রহণের মধ্যদিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন এবং পরবর্তীতে অনুবাদকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৩ সালের নভেম্বর মাসে দৈনিক ইত্তেফাকের শিক্ষানবিশ সহ-সম্পাদক পদে যোগ দেন। এরপর তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে দীর্ঘদিন বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। শাহীন রেজা নূর  ১৯৮২ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সাবেক সংসদ সদস্য শামসুদ্দীন মোল্লার মেয়ে খুরশীদ জাহানের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি দুই পুত্র সন্তানের জনক। স্ত্রী গৃহিনী। বড় ছেলে সৌরভ রেজা নূর ও ছোট ছেলে আবির রেজা নূর।

শাহীন রেজা নূর প্রজন্ম’৭১-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বে সংগঠনের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি জোরদার করা ও মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণসহ আরও বেশকিছু বিষয়। শিক্ষার প্রসার ঘটানের জন্য শিক্ষা আন্দোলন মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। এ ছাড়া সাবেক ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতি, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামসহ আরও অনেক সংগঠনের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে সমকালীন বিষয়ের উপর ‘সময়ের সংলাপ’ নামক একটি টকশো অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের আওতায় ১৯৭১ সালের নৃশংস বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের বিচার কাজে একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী।

 

 

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *